ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজে নজিরবিহীন অনিয়ম

২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ০৭:৩১:২৯
সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজে নজিরবিহীন অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাট খাতের প্রতিষ্ঠান সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে ভয়াবহ সব অনিয়ম ও অসংগতি খুঁজে পেয়েছেন নিরীক্ষক। ৩০ জুন ২০২৫ সমাপ্ত অর্থবছরের এই প্রতিবেদনে নিরীক্ষক ‘কোয়ালিফাইড ওপিনিয়ন’ দিয়েছেন, যার অর্থ হলো—প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অনেক তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করার মতো কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ বা নথিপত্র পাওয়া যায়নি।

নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ২ কোটি ২০ লাখ টাকার স্বল্পমেয়াদী ঋণ দীর্ঘদিন ধরে অপরিশোধিত থাকলেও তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বৈদেশিক বাণিজ্যের পাওনা এবং ১১৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকার কেনাকাটার স্বপক্ষে কোনো বৈধ নথিপত্র দেখাতে পারেনি সোনালী আঁশ। এমনকি কাঁচা পাট সরবরাহকারীদের দেওয়া ২৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার বিশাল অংকের অগ্রিমের বিপরীতে কোনো চুক্তি, বোর্ড অনুমোদন বা সরবরাহকারীদের লিখিত প্রাপ্তিস্বীকারও নেই।

একই চিত্র দেখা গেছে কর্মচারী ও বিভিন্ন স্টোর সরবরাহকারীকে দেওয়া প্রায় ১৩ কোটি টাকার বেশি অগ্রিমের ক্ষেত্রেও, যা দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকলেও এর সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য কাগজপত্র নেই।

কোম্পানিটির অভ্যন্তরীণ লেনদেনেও অস্বচ্ছতা ধরা পড়েছে। আন্তঃকোম্পানি পাওনা হিসেবে ৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা দেখানো হলেও এর মধ্যে ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকার কোনো সঞ্চিতি রাখা হয়নি এবং বাকি অর্থের কোনো প্রমাণ মেলেনি। এমনকি গুদামে অগোছালো ও অসংলগ্নভাবে রাখা ২৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মজুদ পণ্যের প্রকৃত পরিমাণও নিশ্চিত করতে পারেননি নিরীক্ষক।

নিয়ম অনুযায়ী ১ হাজার ৫৭৭ জন স্থায়ী কর্মীর প্রভিডেন্ট ফান্ডে ৮.৩৩ শতাংশ হারে অর্থ জমা দেওয়ার কথা থাকলেও কোম্পানি তা করেনি, যা কর্মীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

শ্রমিক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করার পাশাপাশি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের জন্য ১ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও এর একটি বড় অংশ শ্রমিকদের মাঝে বণ্টন না করে অবৈধভাবে কোম্পানির ব্যবসায়িক ও পরিচালনা কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ৬৯ লাখ টাকার দাবিহীন ডিভিডেন্ডের তথ্য প্রতিবেদনে থাকলেও তা কোন অর্থবছরের পাওনা, তার কোনো রেকর্ড কোম্পানি সংরক্ষণ করতে পারেনি। নিরীক্ষক স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তথ্য গোপন এবং সঠিক নথিপত্র না থাকার কারণেই এই ‘কোয়ালিফাইড ওপিনিয়ন’ জারি করা হয়েছে, যা শেয়ারবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধরনের সতর্কবার্তা।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে