ঢাকা, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

আরব আমিরাতে ওয়েস্টার্ন মেরিনের ৩ জাহাজ রপ্তানি

২০২৫ নভেম্বর ২২ ০৭:২৬:১৪
আরব আমিরাতে ওয়েস্টার্ন মেরিনের ৩ জাহাজ রপ্তানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের রফতানিমুখী বেসরকারি জাহাজ নির্মাণ শিল্পে যুক্ত হলো নতুন সাফল্যের পালক। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডে নির্মিত তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দেশটির স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটেড আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এই জাহাজগুলো কিনে নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবনির্মিত জাহাজ তিনটি আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এই তিন জাহাজ হলো—‘মায়া’, ‘এসএমএস এমি’ ও ‘মুনা’।

এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমুদ্র উপকূল থেকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ এবং সমুদ্রবাণিজ্যের কাজে ব্যবহারযোগ্য এই ল্যান্ডিং ক্র্যাফট জাহাজগুলোর দৈর্ঘ্য ৬৯ মিটার, প্রস্থ ১৬ মিটার এবং ড্রাফট ৩ মিটার। প্রতিটি জাহাজ ১০ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। এই উচ্চমূল্যের রফতানি পণ্য দেশের ক্রমবর্ধমান জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার প্রতি বাংলাদেশের আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছে।

এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওয়েস্টার্ন মেরিন এবং মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের মধ্যে ২০২৩ সালে স্বাক্ষরিত আটটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তিটি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। আটটি জাহাজের এই চুক্তিতে দু’টি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দু’টি ট্যাংকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ওয়েস্টার্ন মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান জানান, চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম ল্যান্ডিং ক্রাফট ‘রায়ান’ এবং জুলাই মাসে দুটি টাগবোট ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তিনটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট জাহাজ হস্তান্তরের পর অবশিষ্ট আরও দু’টি জাহাজ ২০২৬ সালের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে বলে তিনি জানান।

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন এই মুহূর্তটিকে ‘বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ খাতের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ওয়েস্টার্ন মেরিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে একদিনে ৩টি জাহাজ রফতানি করছে। তিনি জোরালোভাবে বলেন, বাংলাদেশের উচিত একক রফতানি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বের হয়ে ভিন্ন রফতানি পণ্য ও ভিন্ন রফতানি গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হওয়া। জাহাজের মতো উচ্চমূল্যের একক পণ্য রফতানির মাধ্যমেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব। এর মাধ্যমে বহির্বিশ্বে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, এই তিন জাহাজ হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত ১১টি দেশে মোট ৩৬টি জাহাজ রফতানি করল, যার বাজারমূল্য ১৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। ২০১৭ সালে এই মারওয়ান শিপিংয়ের কাছেই প্রথম জাহাজ রফতানি করেছিল ওয়েস্টার্ন মেরিন।

অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ আলহমৌদি বলেন, দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও জাহাজ আরব আমিরাতে রফতানি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আব্দুর রহিম খান সহ উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মামুন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে