ঢাকা, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

যে কারনে কিছু মানুষ ভূমিকম্প টের পান না

২০২৫ নভেম্বর ২১ ২০:০৯:১৬
যে কারনে কিছু মানুষ ভূমিকম্প টের পান না

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুক্রবারের ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই লিখেছেন— “কখন ভূমিকম্প হলো কিছুই বুঝিনি”, “ঘুম থেকে উঠেছি দেড় ঘণ্টা আগে, তবুও কিছু টের পাইনি”, “ফেসবুকে ঢুকে দেখছি দেশে ভূমিকম্প হয়ে গেছে।”

প্রশ্ন হলো—একই জায়গায় থেকেও কেন সবাই ভূমিকম্প অনুভব করেন না?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাখাওয়াত হোসেন বলছেন—কোন তলায় আছেন—তার ওপর অনুভবের তারতম্য নির্ভর করে।উপরের তলায় থাকা ব্যক্তিরা ভূমিকম্প বেশি অনুভব করেন, নিচের তলায় থাকা ব্যক্তিরা কম।

এ ছাড়া মানুষভেদে গতিবেগ বা নড়াচড়া অনুভব করার ক্ষমতা আলাদা, যা অনুভূতিতে প্রভাব ফেলে।কিছু মানুষ উচ্চতা বা গতির প্রতি বেশি সংবেদনশীল—তাই হালকা কম্পনও তারা টের পান, অন্যরা পান না।

শাখাওয়াত হোসেন বলেন—বিশ্রামে থাকলে ভূমিকম্প টের পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।হাঁটা, দৌড়ানো, রান্না বা কাজের মধ্যে থাকলে কম্পন ধরা পড়ে না।চুপচাপ ডেস্কে বসে থাকা ব্যক্তি ভূমিকম্প বেশি অনুভব করেন।

শুক্রবার সকাল ১০:৩৮:২৬ মিনিটে হওয়া ভূমিকম্পের উৎপত্তি ছিল নরসিংদীর মাধবদী এলাকায়।আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান—এটি ছিল ৫.৭ মাত্রার কাছাকাছি শক্তিশালী কম্পন।

এর আগে:

৭ জানুয়ারি: তিব্বতের শিগেৎসে শহরে উৎপত্তিস্থল হওয়া ভূমিকম্প ঢাকায় অনুভূত হয় (দূরত্ব ৬১৮ কিমি)

৩ জানুয়ারি: মিয়ানমারের হোমালিন এলাকায় উৎপত্তি হওয়া ৫ মাত্রার ভূমিকম্প

অর্থাৎ—ভূমিকম্প দেশের বাইরে থেকেও বাংলাদেশে তীব্রভাবে অনুভূত হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা জানান—বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে, যা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ টেকটোনিক প্লেট দিয়ে তৈরি। প্লেটগুলো নড়াচড়া করলে শিলাস্তরের ভেতরে শক্তি জমতে থাকে। এই শক্তি যখন সহনক্ষমতার বাইরে যায়, তখন ফল্ট লাইনের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে—এটাই ভূমিকম্প।

ডাউকি ফল্ট: শেরপুর–জাফলং–করিমগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত

এ ছাড়া দেশের ভেতরে ও বাইরে আরও বড় ফল্ট আছে যা বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ায়।

ফারজানা সুলতানা বলেন—“বাংলাদেশ খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ। দূরের বড় ভূমিকম্পও আমাদের জন্য ঝুঁকি।মিয়ানমারের ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে তার প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। আর ভারত-নেপালের বড় কম্পন হলে ঝুঁকি আরও বেশি।”

ড. শাখাওয়াত হোসেনের মতে—“আমরা জাপানের মতো খুব বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ নই, তবে মডারেটলি ভূমিকম্পপ্রবণ।কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি কাঠামো দুর্বল—বিল্ডিং কোড মানা হয় না, প্রশিক্ষণ বা মহড়া খুব কম।”

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে