ঢাকা, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চক্রান্তের ভয়াবহ ইঙ্গিত

২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১০:৩০:৪৫
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চক্রান্তের ভয়াবহ ইঙ্গিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনের চূড়ান্ত বার্তা দিচ্ছেন, ঠিক তখনই শাসকগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে নানা পর্যায়ে ‘নির্বাচনী ট্রেন’ থামানোর নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হওয়া নিয়ে সতর্কবাণী বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি মামলাকে ইস্যু করে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে প্ররোচিত করার চেষ্টা চলছে—এমন ধারনা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, দিল্লির কিছু থিঙ্কট্যাঙ্ক ও একাধিক রাজনৈতিক গোষ্ঠী দীর্ঘমেয়াদে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীন দলকে পুনরায় সংসদে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। জুডিশিয়াল কু, আনসার বাহিনীর ঘেরাও, সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন ও সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ আগের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এবার তাদের লক্ষ্য রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। আলোচনা চলাকালীন সূত্রে দাবি করা হয়, এসব প্রচারণার লক্ষ্য বাহিনীকে সরকারবিরোধী করে তোলা যাতে তা ভবিষ্যৎ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৮ অক্টোবর জারিকৃত একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে। ওই পরোয়ানায় ২৮ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে—তাদের মধ্যে রয়েছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক এবং সেনাবাহিনীর কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সেনাবাহিনী জানায়, চার্জশিটভুক্ত ১৪ জন সেনা কর্মকর্তাকে তারা হেফাজতে নিয়েছে। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই মামলাকে ঘিরে ব্যাপক আলোচিত ও প্ররোচনামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।

২০২৪ সালের জুলাইতে ‘ছাত্র-জনতা-সেনাবাহিনী ভাই ভাই’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনাক্রমকে দেশজুড়ে একটি স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে দেখা হয়েছে। এরপর থেকে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক উত্তেজনায় টেনে আনার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সেটি নিয়েও তীব্র তর্ক চলছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. নুরুল আমিন ব্যাপারীর মন্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে—তিনি মনে করেন, গুম মামলাকে কেন্দ্র করে যে উসকানিমূলক প্রচারণা চলছে, তার পেছনে পার্শ্ববর্তী দেশের সক্রিয়তাও থাকতে পারে। তিনি বলেন, “কোনো কোনো শক্তির উদ্দেশ্য হলো সরকার ও সেনাবাহিনীকে মুখোমুখি করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করা।”

তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেনাপ্রধানের অবস্থান অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বারবার বলেছেন, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করবে না এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করে বারাকে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি যথাসম্ভব রক্ষা করবে। সেনাপ্রধানের বক্তব্য উদ্ধৃত হয়ে এসেছে—“দেশটা আমাদের সবার। সেনাবাহিনী আলাদা কোনো দ্বীপের বাসিন্দা নয়। তাই আমরা জনগণের পাশেই থাকব।”

কয়েকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, প্রশাসনে নিয়োগ-নেতৃত্বক্ষেত্র, টেন্ডার বাণিজ্য ও অবৈধ আয়-রোজগারের সুযোগ হারানোর আশঙ্কায় কিছু চক্র নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন অস্থিরতা সৃষ্টি করে “নির্বাচনের পরিবেশ নেই” বলে যুক্তি উপস্থাপন করে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ তৈরি করতে চায়—এমন সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে প্রতিবেদনে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে