ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

বিরিয়ানি আর কলা হাতে গাজার পথে এই বাংলাদেশি নারী

২০২৫ অক্টোবর ০২ ০৮:২৪:০৬
বিরিয়ানি আর কলা হাতে গাজার পথে এই বাংলাদেশি নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক : শুরু করা আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা-তে। ১৮ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করা এই বহরের লক্ষ্য—ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজার মানুষের কাছে সরাসরি ত্রাণ ও সংহতি পৌঁছে দেওয়া।

রুহি 'রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানা' (RBB) নামের একটি মানবিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, যা বিশ্বজুড়ে শরণার্থী সহায়তায় কাজ করে আসছে। একই মিশনে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমও।

গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রার আগে রুহি বলেন:"আমি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নিচ্ছি, কারণ অন্যায়ের মুখে নীরব থাকা আর সম্ভব নয়। ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার—খাদ্য, পানি, নিরাপত্তা, এমনকি চলাচলের স্বাধীনতাও—দীর্ঘদিন ধরে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই অবরোধ চলতে পারে না।"

তিনি আরও বলেন:"এটি কেবল একটি সাহায্যের বহর নয়, এটি একটি বার্তা—বিশ্ব দেখছে এবং আমরা গাজার মানুষের পাশে আছি। ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই মুক্ত নই।"

রুহির চাচা, নিউক্যাসলের প্রাক্তন লর্ড মেয়র ও স্বতন্ত্র কাউন্সিলর হাবিব রহমান বলেন:"রুহির সাহস ও মানবিক মূল্যবোধ আমাদের গর্বিত করে। অবশ্যই আমরা উদ্বিগ্ন, কারণ এই যাত্রা বিপজ্জনক। তবে মানবতার আহ্বানের কাছে ভয়কে থামানো যায় না। এখনই বিশ্ব নেতাদের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।"

রুহির মানবিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে, যখন তিনি ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (NHS) পা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু তিন বছর বয়সী সিরিয়ান শিশু আয়লান কুর্দির মরদেহের ছবি তার জীবন বদলে দেয়।

চাকরি ছেড়ে রুহি পাড়ি জমান গ্রিসের শরণার্থী শিবিরে। সেখান থেকেই জন্ম নেয় তার সংস্থা রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস—নিউক্যাসলে নিজের পরিবারের হাতে রান্না করা বিরিয়ানি আর বাজার থেকে কেনা কলা দিয়ে শুরু হওয়া এই ছোট উদ্যোগটি পরবর্তীতে রূপ নেয় একটি আন্তর্জাতিক মানবিক মিশনে।

২০১৫ সাল থেকে, এই নারী-নেতৃত্বাধীন সংস্থাটি গ্রিস, লেবানন ও গাজার দুর্গম শরণার্থী শিবিরগুলোতে হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে খাবার, ওষুধ, পোশাক ও জরুরি সহায়তা।

RBB’র মূল দর্শন:সহানুভূতির চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো মর্যাদা। শরণার্থীদের ‘উপকারভোগী’ নয়, ‘অংশীদার’ হিসেবে দেখা হয়।

২০২৫ সালে ফিলিস্তিনের মানবিক পরিস্থিতি আরও সংকটময়। রাজনৈতিক চাপ, সেন্সরশিপ ও প্রতিবাদ দমন পরিস্থিতিকে ঘনিভূত করেছে।

রুহি বলেন:"যখন সরকার ও রাজনীতিবিদরা জনগণের কণ্ঠস্বর শোনে না, তখন সাধারণ মানুষকেই অহিংসভাবে সরাসরি পদক্ষেপ নিতে হয়।"

গাজার পথে আগের বহু নৌবহর বাধার সম্মুখীন হয়েছে। রুহি ও তার সহযাত্রীরা সে ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন, তবুও বিশ্বাস রাখেন—নীরব থাকা মানেই অন্যায়ের পাশে দাঁড়ানো।

রুহির শহর নিউক্যাসল, যেখান থেকে তার যাত্রা শুরু, জানে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো মানে কী।

রুহি বলেন:"গাজার মানুষ যেন জানে—তাদের সংগ্রাম অশ্রুত নয়। নিউক্যাসল থেকে ভালোবাসা ও ন্যায়ের বার্তা নিয়ে আমরা তাদের পাশে আছি।"

সংহতি, মানবতা এবং সাহস—এই তিন মন্ত্রে ভর করেই গাজা অভিমুখে রুহিদের যাত্রা অব্যাহত।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে