ঢাকা, শুক্রবার, ১ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

ভাত ও রুটি বন্ধ করলে শরীরে আসবে ৭ পরিবর্তন

২০২৫ আগস্ট ০১ ১৫:২৭:৪৭
ভাত ও রুটি বন্ধ করলে শরীরে আসবে ৭ পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে স্বাস্থ্যসচেতনতা ও ওজন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অনেকেই খাদ্যতালিকা থেকে চাল ও রুটি বাদ দিচ্ছেন। এই দুটি প্রধান কার্বোহাইড্রেট উৎস হঠাৎ বাদ দিলে শরীরে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়—কিছু ইতিবাচক, আবার কিছু সতর্কতামূলক। আপনি যদি ৩০ দিনের জন্য ভাত-রুটি বাদ দিতে চান, তাহলে জেনে নিন এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলো।

১. শরীর চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তর করে

ভাত ও রুটির মতো উচ্চ কার্ব খাবার বাদ দিলে শরীর বিকল্প শক্তির উৎস খোঁজে—যেটা হয় চর্বি। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় কিটোসিস। শুরুতে কিছুটা দুর্বলতা বা ক্লান্তি লাগলেও কয়েক দিনের মধ্যেই অনেকে জানান যে তাদের শক্তি অনেক বেশি সময় স্থায়ী হয় এবং খাবারের পর ক্লান্তিবোধ কমে।

২. ওজন দ্রুত কমে

প্রথম সপ্তাহেই ১–২ কেজি ওজন কমে যেতে পারে। তবে এর বেশিরভাগই পানি হারানোর কারণে। কারণ কার্বোহাইড্রেট শরীরে পানি ধরে রাখে। যদিও এটা সাময়িক, তবুও এটি ওজন কমাতে আগ্রহীদের জন্য প্রেরণা জোগায়।

৩. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে আসে

ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকলে সাদা ভাত বা পরিশোধিত আটার বদলে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত শস্য যেমন বার্লি, ওটস বা মিলেট খাওয়া উপকারী হতে পারে।

৪. হজমব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে

অনেকে চাল-রুটি বাদ দিয়ে হালকা অনুভব করেন। পেট ফোলাভাবও কমে। তবে খাদ্যতালিকায় আঁশ (ফাইবার) কম থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই প্রচুর সবজি, বীজ, ডাল ও পানির ওপর জোর দিতে হবে।

৫. খাদ্যচাহিদা বেড়ে যেতে পারে

ভাত-রুটি অনেকের জন্য মানসিক প্রশান্তির উৎস। হঠাৎ বাদ দিলে, বিশেষ করে মানসিক চাপের সময় বা শীতকালে তীব্র খিদের অনুভূতি আসতে পারে। বিকল্প হিসেবে মিষ্টি আলু, দই-মুড়ি, ফল খেতে পারেন।

৬. পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে

চাল ও রুটিতে থাকা ভিটামিন বি, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বাদ চলে যেতে পারে। তাই রাগি, জোয়ার, আমরান্থ বা মাল্টিগ্রেইন আটার মতো বিকল্প গ্রহণ জরুরি।

৭. খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ে

৩০ দিনের এই পরিবর্তনের ফলে আপনি বুঝতে পারবেন—কার্বোহাইড্রেটের উপর আপনার নির্ভরতা কেমন। এটি এক ধরনের 'মাইন্ডফুল ইটিং' বা সচেতন খাদ্যাভ্যাস গড়ার দারুণ সুযোগ।

ভাত-রুটি কি পুরোপুরি বাদ দেওয়া উচিত না। বরং লক্ষ্য হওয়া উচিত স্মার্ট কার্বস বেছে নেওয়া। যেমন:

সাদা চালের বদলে: ব্রাউন রাইস, আতপ চাল, হাতে কুটা চাল

সাধারণ আটার বদলে: মাল্টিগ্রেইন, রাগি, জোয়ার

সঙ্গে রাখুন: প্রোটিন (ডাল, ডিম, মাছ, পনির) ও প্রচুর সবজি

বিকল্প যা খেতে পারেন:

মিলেট (রাগি, জোয়ার, বাজরা) – ফাইবার ও খনিজে সমৃদ্ধ

কুইনোয়া, বাকউইট, ডালিয়া – পুষ্টিকর ও পেট ভরানো

ফুলকপির ভাত বা মিলেট রুটি – কম কার্ব, স্মার্ট বিকল্প

সবজি, শাক ও ডাল – পুষ্টি ও স্বাদে পূর্ণ

৩০ দিন ভাত-রুটি বাদ দেওয়ার অভ্যাসটি একটি খাদ্য অভ্যাস রিসেটের মতো কাজ করে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ, শক্তি বৃদ্ধি এবং খাবার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করে। তবে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যকর থাকতে হলে খাদ্যতালিকায় ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। কার্বোহাইড্রেটকে ভয় না করে, বেছে-শুনে গ্রহণ করাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

লাইফ স্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফ স্টাইল - এর সব খবর



রে