ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
Sharenews24

১৬ বছর পর জলবায়ু বিপর্যয়ের নতুন সংকেত

২০২৫ মে ২৫ ১২:৩১:৪০
১৬ বছর পর জলবায়ু বিপর্যয়ের নতুন সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবারও স্বাভাবিক সময়ের আগেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। সাধারণত জুনের প্রথম সপ্তাহে এই মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে, কিন্তু এবার তা ২৫ মে টেকনাফ উপকূল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞরা এই আগাম প্রবেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বলে মনে করছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এর আগে ২০০৯ সালে এ ধরনের আগাম বর্ষার প্রবেশ ঘটেছিল। একই দিনে মৌসুমি বায়ু ভারতের কেরালা উপকূলেও প্রবেশ করেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় বর্ষা মৌসুম শুরুর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক জানান, দুটি কারণ এবারের আগাম বর্ষার মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে:

ম্যাসকারিন হাই প্রেসার বলয়ের শক্তি বৃদ্ধি: মাদাগাস্কারের কাছাকাছি এই উচ্চচাপ বলয়টি সম্প্রতি প্রাবল্য অর্জন করেছে। এখান থেকে বাতাস সোমালিয়া হয়ে ভারত মহাসাগর পেরিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দিকে ধাবিত হয়। এটি বর্ষার আগমন ত্বরান্বিত করেছে।

ভারতের মধ্যপ্রদেশে তাপীয় লঘুচাপের সৃষ্টি: শক্তিশালী অবস্থানে থাকা এই লঘুচাপ দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আর্দ্র বাতাস প্রবেশে সহায়ক হয়েছে, ফলে মৌসুমি বায়ু আগে থেকেই সক্রিয় হয়ে ওঠে।

আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেন, বর্ষার আগাম প্রবেশ মানেই বেশি বৃষ্টি হবে—এই ধারণা সঠিক নয়। বর্ষার কার্যকারিতা নির্ভর করে মৌসুমি লঘুচাপ ও নিম্নচাপের ওপর। সাময়িক কিছু বৃষ্টিপাত হলেও, এই সিস্টেমগুলো অনুপস্থিত থাকলে বর্ষা দুর্বল হতে পারে।

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, আরব সাগরে একটি নিম্নচাপ এবং বাংলাদেশে একটি সম্ভাব্য লঘুচাপ সৃষ্টি হচ্ছে, যা শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

বাংলাদেশের ৭০-৮০ শতাংশ বৃষ্টিপাত নির্ভর করে এই মৌসুমি বায়ুর ওপর। তাই এর আগাম আগমন কিংবা অস্বাভাবিক আচরণ কৃষি, জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশ খাতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি বর্ষা অনিয়মিত হয় বা অসমভাবে বর্ষণ হয়, তাহলে ধান চাষ, সবজি উৎপাদন এবং ভূগর্ভস্থ পানির ভারসাম্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গ্রামীণ অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে