ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

যে কারণে ইউরোপে বাংলাদেশিদের আশ্রয়ের সুযোগ কমছে

২০২৫ এপ্রিল ১৮ ১৩:৩৫:৩৫
যে কারণে ইউরোপে বাংলাদেশিদের আশ্রয়ের সুযোগ কমছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ​নিরাপদ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে কসোভো, কলম্বিয়া, মিশর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিসিয়া। ইইউ’র নতুন এই ঘোষণার ফলে এসব দেশ থেকে আগত নাগরিকদের আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। অর্থাৎ, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে গিয়ে আশ্রয় চাওয়া নাগরিকদের আবেদন এখন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, ২০২৪ সালে গৃহীত অভিবাসন ও আশ্রয় সংক্রান্ত নতুন আইন ২০২৬ সালের জুন মাস থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, বাস্তবতা বিবেচনায় এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আগেই চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো— যেসব দেশের নাগরিকদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা পাওয়ার হার ২০ শতাংশের নিচে, তাদের আবেদন দ্রুত প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি করা। বাংলাদেশিদের আবেদন গৃহীত হওয়ার হার মাত্র ৩.৯৪ শতাংশ, অর্থাৎ ৯৬ শতাংশেরও বেশি আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

২০২৪ সালে ৪৩ হাজার ২৩৬ জন বাংলাদেশি ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন করেন এবং একই সময় ৪৭ হাজার ৭৭৮টি আবেদন ঝুলে ছিল। ইউরোপীয় কমিশনের মতে, বেশিরভাগ বাংলাদেশি যে কারণ দেখিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করেন, তা বাস্তবসম্মত নয়, তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশিদের আবেদন তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে এবং আবেদন বাতিল হলে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে যারা সত্যিকার সংকটে আছেন, তাদের আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে। অভিবাসন বিশেষজ্ঞ শরীফুল হাসান বলেন, “আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা বা নির্যাতনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশিদের অনেকেই আশ্রয় পেতেন। এখন অনেকেই শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কারণে ইউরোপে গিয়ে বলছেন, দেশে নিরাপদ না। কিন্তু বাস্তবে ইউরোপ এসব কারণকে গ্রহণ করছে না।”

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসন নীতির সংস্কার চলছে ২০১৫-১৬ সালের অভিবাসন সংকটের পর থেকেই। নতুন এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইইউ চায় সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিরাপদ দেশগুলোর নাগরিকদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে পারবে। ইতালির সরকার এই তালিকাকে স্বাগত জানিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ, মিশর ও তিউনিসিয়াকে তালিকাভুক্ত করাকে রোম সরকারের জন্য “একটি সাফল্য” বলে অভিহিত করেছেন।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মনে করছেন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে সত্যিকার আশ্রয়প্রার্থীরাও ন্যায্য বিচার পাবেন না। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, তালিকাটি ‘ডায়নামিক’, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হতে পারে এবং প্রয়োজন হলে কোনো দেশকে তালিকা থেকে বাদও দেওয়া যাবে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে