ঢাকা, সোমবার, ৬ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

লন্ডনের বিতর্কিত ফ্ল্যাট: টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে আবদুল মোতালিফের সম্পর্কের অজানা গল্প

২০২৫ জানুয়ারি ০৪ ২০:৩২:৫৩
লন্ডনের বিতর্কিত ফ্ল্যাট: টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে আবদুল মোতালিফের সম্পর্কের অজানা গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডনের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে চলমান বিতর্ক এখন নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি এবং লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের দখলে রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে এই ফ্ল্যাটের মালিক আবদুল মোতালিফ নামে এক ব্যবসায়ীকে নিয়ে, যিনি এই ফ্ল্যাটটি বিনা মূল্যে টিউলিপকে ব্যবহার করতে দিয়েছেন। তিনি কীভাবে শেখ হাসিনার পরিবারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, এবং এই ফ্ল্যাটের মাধ্যমে তিনি কী ধরনের রাজনৈতিক ও আর্থিক সম্পর্ক তৈরি করেছেন, এসব প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুসন্ধান চলছে।

আবদুল মোতালিফ একজন প্রবাসী ব্যবসায়ী, যিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। তার জন্ম ১৯৫৪ সালের নভেম্বরে এবং তিনি বিলুপ্ত দুটি কোম্পানি, "ওকস কন্সট্রাকশন" এবং "এ এম প্রোপার্টি সার্ভিস"-এর সাথে যুক্ত ছিলেন। তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম মূলত আবাসন এবং নির্মাণ খাতে রয়েছে। তবে তার কোম্পানিগুলোর ব্যাপক লেনদেন বা প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। মোতালিফ লন্ডনে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়মিত যাতায়াতের একটি নেটওয়ার্কের অংশ হতে পারেন, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়।

টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বাস করছেন, যা মোতালিফ তাকে বিনা মূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছেন। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালে বিনা মূল্যে এই ফ্ল্যাটটি টিউলিপকে দেওয়া হয়েছিল। এই ফ্ল্যাটটি আগে ব্যারিস্টার মঈন গনির ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে টিউলিপ সিদ্দিকের নামে স্থানান্তর করা হয়। ফ্ল্যাটটি ২০০১ সালে ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ডে কেনা হয়েছিল, আর বর্তমানে একই ভবনের একটি ফ্ল্যাটের দাম ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা)।

মোতালিফের সঙ্গে শেখ হাসিনার কোনো সরাসরি সম্পর্কের প্রমাণ নেই। তবে তিনি প্রবাসে আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। এমনকি মঈন গনির মতো আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মঈন গনি, যিনি আন্তর্জাতিক সালিসি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি তুলেছেন, তার সম্পর্কও শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টিউলিপ সিদ্দিক যদি কোনো ফ্ল্যাট বিনা মূল্যে ব্যবহার করেন, তবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তা ঘোষণা করা বাধ্যতামূলক। তবে এখনও পর্যন্ত টিউলিপ এই বিষয়টি যথাযথভাবে ঘোষণা করেছেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। একইভাবে, বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলেও প্রশ্ন উঠেছে, প্রবাসী ব্যবসায়ীরা কীভাবে ক্ষমতাসীন দলের পরিবারকে সুবিধা দিতে পারে এবং এসব সম্পর্কের রাজনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে।

এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও আবদুল মোতালিফের মধ্যে সরাসরি আর্থিক বা রাজনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে এটি স্পষ্ট যে, প্রবাসী আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সহায়তায় হাসিনা পরিবারের রাজনৈতিক এবং পারিবারিক কার্যক্রমের প্রসার ঘটছে। এই বিষয়টি আরও গভীর অনুসন্ধানের দাবি রাখে।

কেএইচ

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে