ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

অবশেষে জানা গেল বিএসসির দুই জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের কারণ

২০২৪ নভেম্বর ১৫ ২৩:১৩:৫৭
অবশেষে জানা গেল বিএসসির দুই জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন- বিএসসি’র দুই জাহাজে সম্প্রতি আগুন লাগার ঘটনা নাশকতা নয় উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে আগুন লাগার তিনটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে এ প্রতিবেদন জমা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এটা কোনো নাশকতা নয়। নাবিক ও বিএসসির দায়িত্বরত ব্যক্তিদের অদক্ষতা, অসতর্কতা ও অবহেলার কারণে জাহাজে আগুন ধরেছে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার) কমোডর এম ফজলার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বন্দরের উপ-সংরক্ষক ফরিদুল আলম, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, ডিজিএফআই, এনএসআই, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি ও কন্ট্রোলার অব মেরিটাইম এডুকেশনের ক্যাপ্টেন সাঈদ আহমেদ।

জানা গেছে, তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার) কমোডর এম ফজলার অন্য সদস্যদের নিয়ে কুতুবদিয়ায় পুড়ে যাওয়ায় ‘এলপিজি সোফিয়া’ জাহাজটি তিন দফা পরিদর্শন করেছেন। ১২ অক্টোবর মধ্যরাতে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ায় মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) ‘ক্যাপটেইন নিকোলাস’ থেকে লাইটার জাহাজ ‘এলপিজি সোফিয়া’য় এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) স্থানান্তরের সময় এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ছিল ক্যাপ্টেন নিকোলাস জাহাজের নাবিকদের অসতর্কতা ও অবহেলা। সবার আগে এ জাহাজেই আগুন লেগেছিল। গভীর সাগরের কুতুবদিয়ায় এলপিজি সুফিয়া ও ক্যাপটেইন নিকোলাস পাশাপাশি একটি আরেকটির সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। সামনের অংশে পাঁচটি ও পেছনের অংশে পাঁচটি রশি ছিল। হোস পাইপ দিয়ে নিকোলাস থেকে সুফিয়ায় এলপিজি স্থানান্তর করা হচ্ছিল। কিন্তু রাত ১২টা ১০ মিনিটে সামনের অংশের পাঁচটির মধ্যে একটি রশি প্রথমে ছিঁড়ে যায়। পরবর্তী ২০ মিনিটে বাকি চারটি রশি ছিঁড়ে যায়।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এরফলে জাহাজ দুটি দূরে সরে যেতে থাকে। টান পড়ে হোস পাইপে। একপর্যায়ে হোস পাইপ ছিঁড়ে গিয়ে গ্যাস লিকেজ হতে শুরু করে। লিকেজ হওয়া এলপিজি গ্যাসে রূপান্তরিত হতে আরও প্রায় পাঁচ মিনিট সময় পায়। ১২টা ২৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তখন পেছনের দিকের পাঁচটি রশিতে আগুন লেগে সুফিয়ায় ছড়িয়ে যায়। আর হোস পাইপ থেকে আগুন ধরে যায় নিকোলাসে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সুফিয়ার নাবিকরা নিকোলাসের ক্যাপ্টেনকে দফায় দফায় জানানোর চেষ্টা করলেও তার সাড়া মেলেনি। ফলে আগুনের মাত্রা বেড়ে যায়। পরে নিকোলাসের আগুন নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দিয়ে নেভানো গেলেও সুফিয়া জাহাজে ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত আগুন জ্বলে।

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ও সচিব ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডে কারণ অনুসন্ধানে মানবসৃষ্ট কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এখানে জাহাজে কর্তব্যরতদের অসতর্কতা ছিল বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যদি তারা রাত্রিকালীন ডিউটিতে আরও সজাগ ও সতর্ক থাকতেন, তাহলে এ ধরনের দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও এড়ানো যেত।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে