ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

‘কোটায় যারা আসে তারাও মেধাবী’

২০২৪ জুলাই ১২ ১৭:৪৯:২৩
‘কোটায় যারা আসে তারাও মেধাবী’

নিজস্ব প্রতিবেদক : পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান এ টি এম আহমেদুল হক চৌধুরী বলেছেন, যারা কোটায় চাকরি পান তারাও মেধাবী, তবে একটু পিছিয়ে থাকা। আমি যখন চেয়ারম্যান ছিলাম তখন দেখেছি, যারা কোটায় আসে, আর যারা মেধায় আসে তাদের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য থাকে না। এই ধরেন যে মেধায় ফার্স্ট হয়েছে সে ৭০০ নম্বর পেয়েছে। আর যে কোটায় এসেছে সে ৬৩০ বা ৬৪০ পেয়েছে।

কোটার নানা দিক নিয়ে নিয়ে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিএসসি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

পাবলিক সার্ভিস কমিশন তো নিয়োগ দেয় না, সুপারিশ করে জানিয়ে এ টি এম আহমেদুল হক চৌধুরী বলেন, তখন আমরা কোটায় যাদের সুপারিশ করেছি, কার্যক্ষেত্রে তো এখন তাদের দেখি কম যোগ্যতা দেখাচ্ছে না। তারাও ভালো করছে।

তিনি বলেন, আমি কিন্তু তাদের মেধায় সন্তুষ্ট ছিলাম। যাদের কোটায় নিয়োগের সুপারিশ করেছি তারাও মেধাবী, আর যোগ্যতায় যারা এসেছে তারাও মেধাবী। যারা কোটায় এসেছে তারা হয়তো একটু পেছনে ছিল। নম্বর হয়তো একটু কম পেয়েছে। আমি দেখেছি, যারা মেধায় চাকরি পেয়েছে আর যারা কোটায় চাকরি পেয়েছে তাদের সবার মার্ক কিন্তু ৫০-এর মধ্যেই ছিল।

তিনি জানান, ২০১৮ সাল থেকে কোটা না থাকায় আদীবাসী ও প্রতিবন্ধীরা বঞ্চিত হয়েছেন। সত্যিকার অর্থে বঞ্চিত হয়েছে আদিবাসীরা। বঞ্চিত হয়েছে যারা শারীরিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তারা। আর বঞ্চিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের তো এখন কারো চাকরির বয়স নেই। আর মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্ম ধরলে তাদের আমি বঞ্চিত মনে করব না। এটা নিয়ে একটা বিতর্কও থাকতে পারে।

পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের তো ৫০ শতাংশ নারী। পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও কম থাকে না। সে হিসাবে তো ২৫ বা ৩০ না নারীদের অংশগ্রহণ তো ৫০ শতাংশ হওয়া উচিত। কোটা থাকলে এই সংখ্যাটা আরো বাড়ত। এখনো কিন্তু আমাদের নারীদের বিরাট একটা অংশ গ্রাম থেকে উঠে আসছে।

কোটা কতটুকু থাকা উচিত বা উচিত নয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোটা থাকা উচিত। তবে এটা সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হতে পারে। এর বেশি নয়। আর মুক্তিযোদ্ধা কোটা যেটা, সেটাতে কিন্তু ঝুঁকি আছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্ম এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করবে কি না, সেটাও প্রশ্ন।

তিনি আরও বলেন, অনেকে তো মনে করতে পারে পাকিস্তানই ভালো ছিল। তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা তো থাকছে না। আরেকটা সমস্যা হলো, তৃতীয় প্রজন্মে এসে মেয়েদের বিয়ে হয়ে তো অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ের দিকের নাতি কে সেটা সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও কিন্তু কঠিন। জটিল বিষয় হবে এটা। এতে অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে।

আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কিভাবে চিনি? আমরা যে ডকুমেন্ট নিই, সেখানে বাবার নাম থাকে। সার্টিফিকেটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সন্তানের সন্তানের ক্ষেত্রে নানা জটিলতা হয়। মুক্তিযোদ্ধার তৃতীয় প্রজন্ম রাখতে পারে, সে ক্ষেত্রে যিনি অক্ষম, খুবই গরিব, অসহায় তাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখা যেতে পারে। এর বেশি হওয়া উচিত নয়।

তারিক/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে