ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

সাদিক অ্যাগ্রোতেও বেনজীরের বিশাল বিনিয়োগের সন্ধান

২০২৪ জুন ২৮ ২৩:১৩:৫১
সাদিক অ্যাগ্রোতেও বেনজীরের বিশাল বিনিয়োগের সন্ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদেশ থেকে পশু আমদানিতে সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন তা তোয়াক্কা করেনি। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে চারটি দেশ থেকে নিয়মিত গরু আনছেন তিনি। এই কাজটি নির্ভিগ্নে করতে একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন ইমরান।

অভিযোগ রয়েছে, ওই সিন্ডিকেটে সদস্য হিসেবে রয়েছেন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

এছাড়া, সাদিক অ্যাগ্রোতে বিতর্কিত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে বলেও জানা গেছে।

এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশ থেকে ইমরান বিভিন্ন জাতের গরু দেশে এনে চড়া দামে বিক্রি করছিলেন। এসব গরু আনতে সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেননি তিনি।

আবার যেসব জাতের গরু দেশে আমদানি নিষিদ্ধ সেসব গরুও তিনি দেশে নিয়ে এসেছেন। এই সংক্রান্ত বেশ কিছু ছবি এবং তথ্য-প্রমাণ ঘেঁটে এসব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সম্প্রতি ইমরান মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে ১২টি গরুর একটি চালান দেশে নিয়ে আসেন। গরুগুলো থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে সংগ্রহের পর উখিয়া হয়ে নরসিংদীর শেখ ক্যাটল ফার্মে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গরুগুলো ট্রাকে করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে সাদিক অ্যাগ্রোতে নিয়ে আসা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে গরুগুলো বাংলাদেশে প্রবেশের সময় সব ধরনের সহযোগিতা দেন কক্সবাজারের হলুদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস। গরুগুলো ঠিকভাবে বাংলাদেশে নিয়ে আসাকে সফল অভিযান আখ্যা দিয়ে ফেসবুক পেজে ধন্যবাদ দেওয়া হয়।

ঢাকা ক্যাটল ক্লাব ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেন শেখ জেআর নামে এক ব্যক্তি। তিনি লেখেন, ‘যে ঝুঁকি নিয়ে আমরা এ কাজ করেছি এটা আপনার কারণে সম্ভব হয়েছে। আমরা অনেকেই নতুন স্বপ্ন দেখছি।’

আবার সম্প্রতি চোরাই পথে সীমান্ত দিয়ে রাজস্থান থেকে আটটি গরু আনেন ইমরান। এসব গরুর প্রতিটি ১২ থেকে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। অবৈধভাবে বিদেশ থেকে আনা এসব গরু চড়া দামে বিক্রি করছেন ইমরান।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদের গোপালগঞ্জের গরুর খামারটি প্রস্তুত করে দেন ইমরান। অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে আনা বেশ কিছু গরু বেনজীরের খামারেও পাঠান ইমরান। সাদিক অ্যাগ্রোতে বেনজীরের নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল।

জানা গেছে, বেনজীর আহমেদের বড় অঙ্কের আর্থিক বিনিয়োগ রয়েছে সাদিক অ্যাগ্রোতে। বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার যোগসাজশে গরু চোরাচালানের মাফিয়া হয়ে ওঠেন ইমরান।

অভিযোগ রয়েছে, চোরাচালান বিষয়ে অন্য কোনো খামারের মালিক বা সংশ্লিষ্ট কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁদের বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেন ইমরান। এই জন্য অনেকে মুখ বন্ধ রেখেছেন।

একদিকে অবৈধ পথে চোরাকারবারির মাধ্যমে দেশে পশু আনছেন ইমরান, অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলন করে অবৈধ পথে পশু আমদানি না করতে নিষেধ করছেন। কোরবানির ঈদের আগে তিনি এমন প্রতারণার আশ্রয় নেন।

২০০৮ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধসংলগ্ন ভাঙা মসজিদের গলিতে ২০ লাখ টাকা পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন ইমরান হোসেন। বর্তমানে তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক।

এএসএম/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে