ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

ঢাকা ছাড়ার আগে বান্ধবীর সঙ্গে ‘রাত কাটান’ শাহীন

২০২৪ জুন ২৪ ১২:২৩:১৪
ঢাকা ছাড়ার আগে বান্ধবীর সঙ্গে ‘রাত কাটান’ শাহীন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য-এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন কলকাতায় আনার হত্যার সব আয়োজন সম্পন্ন করে ১০ মে ঢাকায় চলে আসেন। ওঠেন গুলশান দুই নম্বরের ৬৫ নম্বর রোডের ১৭ নম্বর হাউজের দ্বিতীয় তলার বি-১ ফ্ল্যাটে।

আনার নিখোঁজের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর শাহীন বুঝতে পারেন তিনি গ্রেফতার হতে পারেন। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়ার আগে ২০ মে রাতে গুলশানের বাসা ছেড়ে বান্ধবী চেলসি চেরী ওরফে আরিয়াকে নিয়ে রাজধানীর একটি হোটেলে রাত কাটান। শাহীনের গুলশানের বাসা ছাড়ার একটি ভিডিও ফুটেজে এই তথ্য বেরিয়ে আসে।

সেখানে দেখা গেছে, ২০ মে রাত ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানের ফ্ল্যাটের ফটকের সামনে পায়চারি করছেন শাহীন। এই সময় তাকে বিষণ্ণ দেখাচ্ছিল। প্রায় এক মিনিট পায়চারি করার পর ফ্ল্যাট থেকে বের হতে দেখা যায় শাহীনের বান্ধবী আরিয়াকে। তার সঙ্গে ছিল বাসার কাজের ছেলেও। এই সময় আরিয়ার হাতে ট্রলি ও ভ্যানেটি ব্যাগ দেখা গেছে।

ডিবি সূত্র বলছে, তারা ওই রাতে একটি হোটেলে থাকে। পরদিন ভারত-নেপাল ও দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায় শাহীন। আর বান্ধবী আরিয়া চলে যান তার বাসায়।

রাজধানীর মধ্য বাড্ডার বাসিন্দা এই আরিয়া এর আগে শাহীনের সঙ্গে ভারতেও গিয়েছিলেন। আদালতের মাধ্যমে আরিয়ার ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখার অনুমতি পেয়েছে ডিবি। আরিয়াকে এর আগে ডিবি জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।

আনার হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে জানিয়েছে ডিবি। এই মামলায় কোনো ধরনের চাপ নেই এবং অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হবে না বলেও জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই মামলায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না এবং কাউকে অযথা ডাকাডাকি করা হবে না। সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকে আদালতের অনুমতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, আমরা মনে করি গ্যাস বাবুর মোবাইলে অনেক ডিজিটাল এভিডেন্স আছে। ইতোমধ্যে আমরা অপর পক্ষের মোবাইলের ডিজিটাল এভিডেন্স পেয়েছি। গ্যাস বাবুর মোবাইলে আরও কোনো ডিজিটাল এভিডেন্স আছে কি না তা জানতে মোবাইল উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।

তিনি জানান, গ্যাস বাবুকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা আদালতের অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি পেলে তাকে নিয়ে সশরীরে অভিযান চালাব এবং ওই জায়গাগুলোতে নিয়ে আলামতগুলো (মোবাইল) উদ্ধারের চেষ্টা করব।

মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কি না জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, মামলার তদন্তকাজ অনেকটা চূড়ান্ত পর্যায়ে, আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। কিছু কিছু নাম আমরা পেয়েছি তাদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা করছি। এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে আছে।

যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের একটা বন্দিবিনিময় চুক্তি আছে সেহেতু আমরা ভারতীয় পুলিশকে বলেছি যেন তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে আমরা টিম নিয়ে গিয়ে কথা বলেছি।

তিনি জানান, এ ছাড়া পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখার মাধ্যমে আমরা ইন্টারপোলে চিঠি দিয়েছি তার বিষয়ে। শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সবাই কাজ করছি। আরও এক-দুজন আসামি বাকি রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। আশা করছি অতি দ্রুতই মামলাটি নিষ্পত্তির দিকে যেতে পারব।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে