ঢাকা, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

১১ ব্যাংকে ২৭ অ্যাকাউন্ট খালি, করে ফেলেছেন বেনজীর

২০২৪ জুন ০২ ২৩:৩৪:১৮
১১ ব্যাংকে ২৭ অ্যাকাউন্ট খালি, করে ফেলেছেন বেনজীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ১১টি ব্যাংকের ২৭টি অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি খালি করে ফেলেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান শুরুর প্রথম সাত দিনের মধ্যেই তিনি অ্যাকাউন্টগুলো খালি করে ফেলেন।

অ্যাকাউন্টগুলো বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্য এবং তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ছিল। এসব অ্যাকাউন্টে শত শত কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধান টিম জানতে পেরেছে।

দুদক কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের ফ্রিজ (অবরুদ্ধকরণ) আদেশ দেওয়ার এক মাস আগেই গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা উত্তোলন করা হয়।

দুদক অনুসন্ধান শুরু করার প্রথম সপ্তাহে তিনি ১১টি ব্যাংকের ২৭টি অ্যাকাউন্টের সব টাকা উত্তোলন করেন। অ্যাকাউন্টগুলো হলো সিটি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার তিনটি অ্যাকাউন্ট, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশের চারটি, আইএফআইসি ব্যাংকের দুটি, দি প্রিমিয়ার ব্যাংকের তিনটি, ইউনিয়ন ব্যাংকের দুটি, সাউথইস্ট ব্যাংকের দুটি, সিটি ব্যাংকের চারটি ও সোনালী ব্যাংকের চারটি অ্যাকাউন্ট। এ ছাড়া একটি করে অ্যাকাউন্ট আইবিবিএলএ, এবি ব্যাংক এবং প্রাইম ব্যাংকে।

এদিকে দেশের সম্পদ অনুসন্ধান চলার মধ্যেই বেনজীর পরিবারের বিদেশে থাকা সম্পদ অনুসন্ধানেও নেমেছে দুদক। বিশেষ করে সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে তাদের কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, সেসবের খোঁজও নেওয়া হচ্ছে।

ইতিমধ্যে কমিশনের অনুসন্ধান টিম বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে। এরই মধ্যে আদালতের আদেশে বেনজীর পরিবারের মালিকানাধীন রাজধানীর গুলশানে বিশালাকৃতির বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, গোপালগঞ্জে ৩৪৫ বিঘা ও মাদারীপুরে ২৭৩ বিঘা জমি জব্দ এবং অসংখ্য ব্যাংক ও বিও অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে দুদক।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে বিপুল সম্পদ গড়েছেন বেনজীর, তার বেশির ভাগই তিনি কেনেন আইজিপি পদে আধিষ্ঠিত হওয়ার পর। তিনি আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, চাকরিজীবনের শেষ দুই বছরে অর্থাৎ আইজিপি থাকাকালেই পরিবারের সদস্যদের নামে ৪৬৬ বিঘা জমি কেনেন বেনজীর। ১৯টি প্রতিষ্ঠানে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তার পরিবার হয়ে যায় পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী পরিবার। আইজিপি পদটি যেন তার কাছে হয়ে ওঠে ‘আলাদীনের চেরাগ’।

দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘স্ত্রীর ও সন্তানদের মৎস্য ব্যবসা দেখিয়ে আয়কর নথিতে অনেক অর্থ-সম্পদ দেখিয়েছেন বেনজীর। কর দিয়ে বিপুল সম্পদ আয়কর নথিতে দেখালেও এসব সম্পদের উৎসের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আর বিদেশে থাকা সম্পদের বিষয়ে তথ্য দিতে বিএফআইইউতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা সোর্সের মাধ্যমে কমিশনের অনুসন্ধান টিম সিঙ্গাপুর, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় থাকা অবৈধ সম্পদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। ’

গত ২৮ মে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জাসহ তাদের দুই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে চিঠি দেয় দুদক। অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। চিঠিতে আগামী ৬ জুন বেনজীর আহমেদ এবং ৯ জুন তার স্ত্রী জীশান মীর্জা, মেয়ে ফারহিন রিসতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। তবে আরেক মেয়ে জাহরা জেরিন বিনতে বেনজীর অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে তলব করা হয়নি।

শেয়ারনিউজ, ০২ জুন ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে