ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

মুনাফার ঝলক দেখিয়ে শেয়ারবাজারে এসেই লোকসানে এনার্জিপ্যাক

২০২৩ ডিসেম্বর ১৫ ১৪:৩৭:০৫
মুনাফার ঝলক দেখিয়ে শেয়ারবাজারে এসেই লোকসানে এনার্জিপ্যাক

নিজস্ব প্রতিবেদক : আকর্ষণীয় মুনাফা দেখিয়ে প্রিমিয়াম প্রাইসে বা ফেসভ্যালুর বেশি অর্থ নিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি। অথচ দুই বছর না পেরোতেই ৪৭ কোটি টাকা মুনাফার কোম্পানি এখন ৪৫ কোটি টাকার লোকসানে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক প্রতিবেদন স্ফীত করে দেখিয়ে শেয়ারবাজারে আসার প্রবণতা নতুন নয়। অনেক কোম্পানি এসব ছল-চাতুরী করেছে। অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেয়ারবাজারে এলেও পরবর্তী সময়ে এসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের ঠকতে হয়েছে।

শেয়ারবাজারে আসার আগে প্রসপেক্টাসে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য এনার্জিপ্যাকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) উল্লেখ করা হয় ৩ টাকা ১৩ পয়সা, আর নিট মুনাফা দেখানো হয়েছিল ৪৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

এমন আয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসভ্যালু ১০ টাকার সঙ্গে দাম বা প্রিমিয়াম প্রাইসে শেয়ারবাজারে আসার অনুমোদন পায় এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিটি শেয়ার ৩৫ টাকা ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিটি শেয়ার ৩১ টাকায় ইস্যু করে কোম্পানিটি।

ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করেছিল এনার্জিপ্যাক। অথচ ব্যবসায় সমৃদ্ধি আসা তো দূরে থাক, উল্টো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পরই নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে পড়ে কোম্পানিটি।

শেয়ারবাজারে প্রবেশের প্রথম বছরেই ব্যবসায় বড় পতন হয় এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের। ২০২০-২১ অর্থবছরে ইপিএস নেমে আসে ২ টাকা ৩ পয়সায়। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে তা আরও নিচে নেমে দাঁড়ায় ৩৮ পয়সায়। আর সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৩৬ পয়সা হিসাবে ৪৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকার নিট লোকসান হয়েছে। অর্থাৎ শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের পর ব্যবসায় পতন ১৯৬ শতাংশ।

শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। এই বিনিয়োগের বিপরীতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা ৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ পাবেন।

বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের বিপরীতে এই রিটার্নের পরিমাণ খুবই নগণ্য। ৩৫ টাকার বিপরীতে যা ১.৪৩ শতাংশ এবং ৩১ টাকার বিপরীতে ১.৬১ শতাংশ। অথচ যেকোনো ব্যাংকে স্থায়ী আমানত বা এফডিআর করলে এর থেকে অনেক বেশি মুনাফা পাওয়া সম্ভব।

তবে আগের অর্থবছরের ব্যবসায় ১০ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছিল কোম্পানিটি।

ইস্যু ম্যানেজার লঙ্কবাংলা ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে বুক বিল্ডিংয়ে শেয়ারবাজারে আসে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। গত ২৩ জুলাই থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩৪ টাকা ৫০ পয়সায় রয়েছে, যা শেয়ারটির ফ্লোর প্রাইস। অন্যথায় অনেক আগেই এর দর তলানিতে চলে আসতে পারত বলে মনে করেন শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্টরা।

বিষয়টি নিয়ে মতামত জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারে আসার পরই কেন লোকসানে পড়ছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে কারসাজির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে এই প্রবণতা কমে আসবে।

শেয়ারনিউজ, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

অনুসন্ধানী এর সর্বশেষ খবর

অনুসন্ধানী - এর সব খবর



রে