ঢাকা, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

নীরব ঘাতক স্ট্রোকের ১০ সতর্ক সংকেত

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৯:৫৭:৪৪
নীরব ঘাতক স্ট্রোকের ১০ সতর্ক সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্ট্রোক একটি গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যাকে নীরব ঘাতকও বলা হয়। হঠাৎ করেই এটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। যত অসংক্রামক রোগে মানুষের মৃত্যু হয় তার মধ্যে স্ট্রোক দ্বিতীয় প্রধান কারণ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রোক হওয়ার দুই মাস আগেই শরীর কিছু সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে। যদি সময়মতো সেই সংকেতগুলো চিহ্নিত করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়, তবে বড় ধরনের বিপদ এড়ানো সম্ভব।

স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ। এটা সাধারণত হয় কোনো কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ যদি বন্ধ হয়ে যায়। সেটা মস্তিষ্কের রক্তনালি ব্লক হয়ে হতে পারে অথবা মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের কোনো একটি অংশে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। এক্ষেত্রে সেই স্থানের কোষগুলো মৃত হয়ে যায়। যার ফলে স্ট্রোকের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরল, ধূমপান ও মদ্যপান, অতিরিক্ত ওজন, অলস জীবনযাপন এবং হার্টের রোগ থেকেও স্ট্রোক হতে পারে। জন্ময়িনন্ত্রণ বড়ি খাওয়া নারীদের স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় বাবা-মা বা পরিবারে স্ট্রোকের ইতিহাস আছে। তাদেরও স্ট্রোক হতে পারে। এ ছাড়া ৫০ থেকে ৫৫ বছর বয়স এবং তার বেশি বয়সীদের স্ট্রোকের প্রবণতা বেশি। নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে স্ট্রোক বেশি হয়।

০১. মাথা ঘোরা ও ভারসাম্য হারানো: হঠাৎ মাথা ঘোরা, চোখ ঝাপসা হয়ে যাওয়া বা হাঁটার সময় ভারসাম্য হারানো;

০২. হাত-পা অসাড় হয়ে যাওয়া: শরীরের এক পাশের হাত বা পা হঠাৎ অসাড় হয়ে যাওয়া বা দুর্বল লাগা;

০৩. কথায় জড়তা ও অস্পষ্ট উচ্চারণ: হঠাৎ কথা আটকে যাওয়া বা অস্পষ্ট উচ্চারণ মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে;

০৪. দৃষ্টি ঝাপসা বা দ্বিগুণ দেখা: এক চোখ বা দুই চোখেই হঠাৎ দৃষ্টি সমস্যা দেখা দেয়া;

০৫. অস্বাভাবিক ও তীব্র মাথাব্যথা: কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ এমন ধরনের মাথা ব্যথা শুরু হয়, যা আগে কখনো হয়নি এবং এটি খুবই তীব্রতর হয়। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধা বা রক্তক্ষরণ শুরু হলে এই ধরনের ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় এর সঙ্গে বমি ভাব, মাথা ঘোরা বা দৃষ্টির সমস্যা দেখা দেয়;

০৬. ক্লান্তি ও বিভ্রান্তি: শরীর অকারণে দুর্বল হয়ে পড়া, অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা হঠাৎ স্মৃতিভ্রংশের মতো উপসর্গ;

০৭. অকারণে দীর্ঘস্থায়ী হেঁচকি: নারীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী ও অকারণ হেঁচকি স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। মস্তিষ্কের মেডুলা অংশ, যা শ্বাস-প্রশ্বাস ও গিলন নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে কোনো সমস্যা দেখা দিলে হেঁচকি থামতে চায় না;

০৮. অস্বাভাবিক বুকের ব্যথা: স্ট্রোকের আগে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে গেলে অ্যানজাইনার মতো বুকের চাপ বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে;

০৯. মানসিক চাপে বমি বা বমি ভাব: অতিরিক্ত স্ট্রেসের সময় শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, যা রক্তনালী সংকুচিত করে এবং রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়। এর ফলে হঠাৎ বমি বা বমি ভাব দেখা যায়। যদি এর সঙ্গে মাথা ঘোরা, ঝাপসা দেখা বা অজ্ঞান হওয়ার মতো লক্ষণ থাকে, তাহলে এটি স্ট্রোকের সতর্ক সংকেত হতে পারে;

১০. মুখ ঝুলে পড়া: আপনি যখন হাসেন, তখন মুখের একপাশ ঝুলে যায় বা অসাড় বা অমসৃণ হয়।

স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়:

স্ট্রোক প্রতিরোধে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জীবনাচারে পরিবর্তন আনতে হবে, অ্যালকোহল ও ধূমপান পরিহার করতে হবে। কেউ যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি খায় সেটি বন্ধ করতে হবে। ভাতের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এর পাশাপাশি যাদের একবার স্ট্রোক বা ট্রানজিয়েন্ট স্কিমিক অ্যাটাক হয়েছে তাদের পরবর্তী স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি। সেজন্য তাদের ইকোস্প্রিন জাতীয় ওষুধ আজীবন চালিয়ে যেতে হয়।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর



রে