ঢাকা, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
Sharenews24

কেন এসব মুসলিম দেশের মেয়েরা কুমারী?

২০২৫ জুন ২৩ ১৮:৫১:২৫
কেন এসব মুসলিম দেশের মেয়েরা কুমারী?

ডেস্ক রিপোর্ট: বিয়ে শুধু একটি সামাজিক রীতি নয়—এটি ভালোবাসা ও সম্মানের বন্ধনে এক নতুন জীবনের সূচনা। তবে, বিশ্বজুড়ে এমন কিছু দেশ রয়েছে, যেখানে নারীরা স্বাধীনভাবে পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন না। সামাজিক প্রথা, অর্থনৈতিক চাপ এবং সংস্কারমূলক বাধা—সব মিলিয়ে এইসব দেশে নারীদের বিয়ে করার পথ অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে দিন দিন বাড়ছে অবিবাহিত নারীর সংখ্যা।

২০১০ সালে কুয়েতের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘আল রাই’-এর একটি সমীক্ষায় এই বিষয়ে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিশরে অবিবাহিত মুসলিম নারীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা প্রায় ৯০ লক্ষ। এই মেয়েদের বয়স ২৪ থেকে ৩৫-এর মধ্যে।

মিশরের পরেই রয়েছে আলজেরিয়া যেখানে অবিবাহিত মেয়ের সংখ্যা ৪০ লক্ষ। ইরাকে এই সংখ্যা ৩০ লক্ষ, ইয়েমেনে ২ লক্ষ। এমনকি সৌদি আরব, তিউনিসিয়া, সুদানে প্রায় ১.৫ লক্ষ মেয়ে এখনো বিয়ে করেননি। এছাড়া সিরিয়ায় এই সংখ্যা ৭০ হাজার এবং লেবাননে ৪৫ হাজার।

প্রশ্ন উঠেছে, এসব দেশগুলিতে অবিবাহিত নারীদের সংখ্যা এত বেশি কেন? এর কয়েকটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথমত, এই দেশগুলিতে বিবাহের রীতিনীতি ও সামাজিক অনুষ্ঠানের খরচ অত্যন্ত বেশি। বিয়ের যৌতুক, উপহার এবং ব্যয়বহুল আনুষ্ঠানিকতা বহন করা বেশিরভাগ পরিবারের কাছেই খুব কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে, অর্থের অভাবে বহু বিয়ে শেষ পর্যন্ত আর হয়ে ওঠে না।

দ্বিতীয়ত, অনেক দেশে বিবাহপরবর্তী জীবনে পুরুষের সহিংস আচরণ এবং ভোগসর্বস্ব মনোভাব নারীদের বিয়েতে নিরুৎসাহিত করে তুলেছে। নিরাপত্তার অভাব এবং সম্পর্কের তিক্ততা এড়াতে অনেক নারীই বিয়ে থেকে দূরে থাকছেন।

তৃতীয়ত, বর্তমান সময়ে মেয়েরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত না করে বিয়েতে কোনোভাবেই আগ্রহী নন। তারা নিজেদের শিক্ষা ও কর্মজীবনে গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের একটি সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে আসতে পারছেন।

‘আল রাই’-এর প্রতিবেদনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। জর্ডানে মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ৩০ থেকে বেড়ে ৩২ বছর হয়েছে। সামগ্রিকভাবে আরব এবং উপসাগরীয় দেশগুলিতে সামাজিক চিন্তাভাবনায় একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা সুস্পষ্ট। নারীরা এখন বিয়ের চেয়েও বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন নিজের কর্মজীবনকে।

এছাড়াও, তারা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজেরাই গ্রহণ করতে শিখছে। সমাজের এই পরিবর্তন ধীর পদক্ষেপে হলেও ইতিমধ্যেই দৃঢ় হতে শুরু করেছে।

মারুফ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে