ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
Sharenews24

স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্কে নতুন মোড়

২০২৫ জুন ২০ ১৫:২০:২৪
স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্কে নতুন মোড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উল্লেখ করে একটি ‘বিতর্কিত’ রায় দিয়েছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। এই রায় বিএনপি এবং মুক্তিযুদ্ধ-সংক্রান্ত ইতিহাসের বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে।

২০০৯ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়, বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রায় দেন যে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন, বরং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষক।

এই রায়ে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ: দলিলপত্র’ গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ড বাতিল ঘোষণা করে তা বাজেয়াপ্ত ও প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে।

এই রায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করলেও বিএনপি এবং তাদের সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অনেকের মতে, একটি রাজনৈতিক ইস্যুকে আদালতের আওতায় এনে বিচার করা ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন বিচারপতি খায়রুল হক, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি সরকারের প্রতি অনুগত থেকে বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছেন।

অবসরের দুই বছর পর, বিচারপতি খায়রুল হককে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়, যা রাজনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তির ইঙ্গিত বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলুপ্তি, হাইকোর্টের আগাম জামিনের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়াসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত রায়ের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।

২০২৫ সালের আগস্টে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়—

১৩ আগস্ট: আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ

১৮ আগস্ট: ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ইমরুল হাসান মামলাটি দায়ের করেন

২৫ ও ২৮ আগস্ট: আরও দুটি মামলা হয় নারায়ণগঞ্জ ও শাহবাগ থানায়

এরপর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। প্রথমে ভারতে প্রবেশ করেন, পরে যুক্তরাজ্যে মেয়ের বাসায় আশ্রয় নেন বলে জানা যায়। বর্তমানে তাঁর অবস্থান গোপন।

দুই বিতর্কিত বিচারপতিকে শপথ পাঠ করানো, যাদের একজন হত্যা মামলার আসামি এবং অন্যজন সন্ত্রাসী কার্যকলাপে অভিযুক্ত ছিলেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইন কমিশনের গাড়িচালক এস. এম. সামসুল আলমকে চাকরি থেকে অবসর নিতে বাধ্য করা।

আগাম জামিনের ক্ষমতা হাইকোর্ট থেকে কেড়ে নেওয়া, যা সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার সংকুচিত করে।

বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেছেন, “বিচারাঙ্গনে কোনো মাফিয়া বা সিন্ডিকেট চলবে না।”

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মন্তব্য করেন, “বিচার বিভাগ ধ্বংস ও ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় খায়রুল হকের ভূমিকা ছিল মুখ্য। তাকে বিচারের মুখোমুখি করা জরুরি।”

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে