ছেলে ও ছেলের বান্ধবীর বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভ ও দুর্নীতিবিরোধী তদন্তের মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামসরাইন ওইয়ুন-এর্ডেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) পার্লামেন্টে আস্থাভোটে পরাজিত হয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।

১২৬ আসনের পার্লামেন্টে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৬৪ জন এমপির সমর্থন পাননি ওইয়ুন-এর্ডেন। আস্থাভোটে অংশ নেওয়া ৮৮ জন এমপির মধ্যে ৪৪ জন তার পক্ষে এবং ৩৮ জন বিপক্ষে ভোট দেন। বাকিরা ভোটদানে বিরত ছিলেন।

আস্থা হারিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে ওইয়ুন-এর্ডেন বলেন, “মহামারি, যুদ্ধ ও বৈশ্বিক শুল্ক সংকটের সময় জাতির সেবা করতে পেরে আমি গর্বিত।”

তবে তার পতনের পেছনে মূল চালিকা শক্তি ছিল সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একাধিক ছবি। ওই ছবিগুলোতে তার ছেলেকে এবং ছেলের বান্ধবীকে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে দেখা যায়। একটি ছবিতে দেখা যায়, ছেলের বান্ধবী কালো ডিওর ব্যাগসহ ব্যয়বহুল শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, যার ক্যাপশনে লেখা: “হ্যাপি বার্থডে টু মি।” অন্য একটি ছবিতে সেই যুগলকে সুইমিং পুলে চুম্বনরত অবস্থায় দেখা যায়।

ছবিগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। শত শত তরুণ প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের আয়ের উৎস এবং জীবনযাত্রার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাস্তায় নামেন। চাপের মুখে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা প্রধানমন্ত্রী পুত্রের আর্থিক লেনদেনের তদন্ত শুরু করে।

যদিও ওইয়ুন-এর্ডেন সব অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাটিকে একটি ‘ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা’ বলে দাবি করেন। তবে মঙ্গোলিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি ব্যতিক্রমী নয়—দেশটি এর আগেও দুর্নীতির অভিযোগে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

এই ঘটনা শুধু একটি সরকারের পতন নয়, বরং একটি বার্তাও—ক্ষমতার শীর্ষেও পারিবারিক জবাবদিহিতা আজ অবধারিত।

মিরাজ/