ঢাকা, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
Sharenews24

কলকাতা থেকে ওবায়দুল কাদেরের খোলামেলা স্বীকারোক্তি

২০২৫ জুন ০৬ ১০:৩১:৫৯
কলকাতা থেকে ওবায়দুল কাদেরের খোলামেলা স্বীকারোক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন তখনই আসবে, যখন আমরা দেশের মাটিতে ফিরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করতে পারব।” কলকাতা থেকে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

আত্মগোপনের দিনগুলো: বাথরুমে আশ্রয়, মুখে মাস্ক

জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের সময় তিনি বাসা বদল করে তিন মাস আত্মগোপনে ছিলেন বলে দাবি করেন কাদের। সবচেয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয় ৫ আগস্ট, যখন ঢাকামুখী বিক্ষোভের খবর পেয়ে তিনি জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে অন্য একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন।

তাঁর ভাষায়, “ঘর আক্রান্ত হলে আমি ও আমার স্ত্রী বাথরুমে লুকাই। সেখানে অনেকক্ষণ থাকতে হয়। শেষপর্যন্ত যারা লুটপাট করছিল, তারা বাথরুমের দরজায় আঘাত করছিল। তখন আমি বলি, খুলে দাও।”

বাথরুমের দরজা খোলার পর বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের চক্ষু চড়কগাছ! কেউ বলছিল “জনতার হাতে তুলে দাও,” কেউ বলছিল “সেনাবাহিনীর হাতে দাও।” শেষ পর্যন্ত তারা কাদেরকে শার্ট পাল্টে, মুখে মাস্ক পরিয়ে একটি ইজিবাইকে করে বের করে নিয়ে যায়।

সেনাবাহিনীর ভাষণ ও আতঙ্কের রাত

তিনি বলেন, “জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ভাষণ দেবেন শুনে বুঝে গিয়েছিলাম, পরিস্থিতি ভয়াবহ। বাইরে যাওয়ার উপায় ছিল না।” অনেকেই তখন সেনানিবাসে আশ্রয় নিলেও কাদের দাবি করেন, তিনি ক্যান্টনমেন্টে যাননি। ছিলেন প্রাইভেট বাড়িতে।

ভুল স্বীকার নিয়ে কী বললেন?

ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যদি কোনো ভুল করে থাকি, তাহলে দেশের মাটিতে, দেশের জনগণের কাছেই ক্ষমা চাইব। কিন্তু দেশের বাইরে থেকে তো ক্ষমা চাওয়া যায় না।”

তাঁর মতে, আন্দোলনটি কোনো গণ-উত্থান ছিল না, বরং ‘সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান’। তবে ছাত্রদের আন্দোলনের ভেতরে কিছু ভুল হয়েছে, সেটি তারাও আলোচনা করছেন বলে জানান।

সরকার পতনের আগাম বার্তা পেয়েছিলেন?

৪ আগস্ট রাতে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক বিপর্যয়ের আভাস পেয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন কাদের। তবে সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো “পরিস্থিতির গুরুত্ব যথাযথভাবে বোঝাতে পারেনি” বলেও দাবি করেন তিনি।

বাহিনী ব্যবহারের দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

ছাত্র আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি দায় দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর। “আমরা আমাদের দলীয়ভাবে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছিলাম,”—বললেও তিনি স্বীকার করেন যে পরিস্থিতি পুরোপুরি অনুধাবন করা সম্ভব হয়নি।

কাদের কোথায় ছিলেন?

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনেকে সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে সেনাবাহিনীর প্রকাশিত ৬২৬ জনের তালিকায় কাদেরের নাম নেই। এ বিষয়ে কাদের বলেন, “সেনানিবাসে যাওয়ার চিন্তা আমার ছিল না।”

ভারতে যাওয়ার আগেও শেখ হাসিনা বা অন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে