ঢাকা, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
Sharenews24

শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় বিনিয়োগকারীরা

২০২৫ জুন ০৫ ২০:২৯:০৯
শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মন্দার মুখে থাকা স্থবির শেয়ারবাজারের গতি ফেরাতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের প্রধান শেয়ারসূচক পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে এবং বাজার মূলধন প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে দৈনিক লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে আসায় বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে, যা বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা দিয়েছে।

বুধবার (০৪ জুন) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, “এই পরিস্থিতি কেবল সাধারণ বাজার সংশোধন নয়, বরং এটি একটি কাঠামোগত সংকট। এ থেকে উত্তরণে জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ একান্ত জরুরি।”

ইকবাল হোসেন প্রস্তাব করেন, অপ্রদর্শিত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হোক, তবে এর সঙ্গে তিন বছরের ‘লক-ইন পিরিয়ড’ বাধ্যতামূলক করা হোক। তার কথায়, “লক-ইন সময়ে বিনিয়োগকারীরা মূলধন তুলতে পারবেন না, শুধু ডিভিডেন্ড আয় নিতে পারবেন।” তিনি মনে করেন, এমন সুযোগ চালু হলে বাজারে তারল্য ফিরবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

ইকবাল হোসেন বলেন, শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করেছিলেন, এবারের বাজেট তাদের জন্য প্রণোদনামূলক হবে। বিশেষ করে ব্যক্তি পর্যায়ে মূলধন লাভের ওপর কর প্রত্যাহার এবং ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড আয়ে কর মওকুফের প্রত্যাশা ছিল। “কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সরাসরি কোনো সুবিধা রাখা হয়নি,”—বলেন তিনি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য করহার ২০ শতাংশ নির্ধারণ করে পূর্বের তুলনায় কিছুটা স্বস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত ১০ শতাংশের কর ব্যবধানের স্থলে বাস্তব ব্যবধান দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭.৫ শতাংশ, যা প্রত্যাশার চেয়ে কম।

মার্চেন্ট ব্যাংকের জন্য করহার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে ২৭.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য তেমন কোনো সুবিধা আনবে না বলে মনে করেন সংগঠনের সভাপতি।

এছাড়া, ব্রোকারেজ লেনদেনে উৎসে কর ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০৩ শতাংশে নামানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে উপকৃত করবে; সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এতে তেমন কোনো সরাসরি লাভ পাবেন না।

ইকবাল হোসেন বলেন, বাজেটের কিছু সমন্বয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুবিধাজনক হলেও, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য তা বাস্তবিক অর্থে স্বস্তি আনতে ব্যর্থ হয়েছে।”

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সরকার যদি বিনিয়োগকারীদের দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে, তাহলে শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরবে এবং একটি নতুন গতি সঞ্চার হবে।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে