ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
Sharenews24

মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের মুনাফার ৭৫% ডিভিডেন্ড দিতে চায় আইসিবি

২০২৫ মে ২৯ ০৭:৫১:২৪
মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের মুনাফার ৭৫% ডিভিডেন্ড দিতে চায় আইসিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক মিউচুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) চলতি অর্থবছরের মুনাফার কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ ইউনিট হোল্ডারদের মধ্যে ডিভিডেন্ড হিসেবে বিতরণের অনুমোদন চেয়েছে। একই সঙ্গে অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ মুনাফা প্রভিশনিংয়ে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আইসিবি চায়, আনরিয়ালাইজড লোকসান (unrealised losses) মোকাবেলায় প্রভিশনিং বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করা হোক, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা অন্তত কিছুটা ডিভিডেন্ড পেতে পারেন।

আইসিবি গত ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ প্রস্তাব উপস্থাপন করে। এর আগে ১৭ মে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে এক বৈঠকেও একই সুপারিশ করে আইসিবি।

আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের অর্থে গঠিত। কিন্তু বাজার পতনের কারণে অনেক ফান্ডকেই প্রভিশন রেখে ডিভিডেন্ড না দিয়ে বছর শেষ করতে হয়েছে। এতে শুধুমাত্র বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছুটা প্রভিশনিং ছাড় দিলে বিনিয়োগকারীরা অন্তত কিছুটা ডিভিডেন্ড পেতেন।

আইসিবি জানায়, ২০২৪ সালে পরিচালিত ৬২টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৫২টিই লোকসান করেছে। এর মধ্যে ৪৯টি কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি, যদিও ৯টি ফান্ড লোকসানেও কিছু ডিভিডেন্ড দিয়েছে। কেবল ৬টি ফান্ডই পোর্টফোলিওতে লাভ ধরে রাখতে পেরেছে।

অধিকাংশ ফান্ড বাজার মূল্য হ্রাসের কারণে বড় অঙ্কের অহসান লোকসানে পড়েছে এবং সে অনুযায়ী প্রভিশন রাখতে বাধ্য হয়েছে। এতে মুনাফা থাকলেও ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি।

আইসিবির ট্রাস্টি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, টানা ডিভিডেন্ড না পাওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে ইউনিট সারেন্ডার করে মূলধন তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে শেয়ারবাজারে লিকুইডিটি সংকট আরও তীব্র হতে পারে।

আইসিবির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শরিকুল আনাম বলেন, রিটার্নের দিক থেকে বন্ড বা এফডিআর-এর চেয়ে মিউচুয়াল ফান্ড পিছিয়ে থাকায় অনেকেই শেয়ারবাজার ছেড়ে দিচ্ছেন। আগামী অর্থবছরেও যদি ডিভিডেন্ড না দেওয়া যায়, তাহলে অনেক বিনিয়োগকারী ইউনিট তুলে নেবে বলে জানিয়েছে।

২০০১ সালের “সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা”-এর ধারা ৬৭ অনুযায়ী,“মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর বিনিয়োগের বাজার মূল্য ক্রয়মূল্যের নিচে নামলে, ডিভিডেন্ড ঘোষণার আগে সেই লোকসানের বিপরীতে প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক।”

এ বিধান মেনেই এতদিন ফান্ডগুলো প্রভিশনিং করত। তবে ২০২৩ সাল থেকে বিএসইসি’র মৌখিক নির্দেশনায় ১০০ শতাংশ প্রভিশনিং বাধ্যতামূলক হয়। যার ফলে ডিভিডেন্ড প্রদানে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

মিউচুয়াল ফান্ড সেক্টর বর্তমানে আস্থা সংকট ও লিকুইডিটি সংকটে পড়েছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে প্রভিশনিং সংক্রান্ত বিধানে সাময়িক শিথিলতা দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। বাজার উন্নয়নের স্বার্থে এখনই সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন, যাতে মিউচুয়াল ফান্ড শিল্প টিকে থাকতে পারে এবং বিনিয়োগকারীরাও আশার আলো দেখতে পান।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে