ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
Sharenews24

নতুন অভিবাসন নীতি

যুক্তরাজ্যে কপাল পুড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের

২০২৫ মে ১৩ ১৯:৫৯:১৩
যুক্তরাজ্যে কপাল পুড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে দেশটির সরকার। সোমবার (১২ মে) প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার নতুন এই নীতির ঘোষণা দেন।

এতে প্রথমবারের মতো বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর ৬ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্নাতক ডিগ্রির পর যুক্তরাজ্যে থাকার সময়সীমা কমিয়ে ১৮ মাসে আনা হয়েছে, যা আগে ছিল দুই বছর।

নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, নন-ইইউ (ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের) শিক্ষার্থীদের বার্ষিক টিউশন ফি পড়বে ২০ হাজার থেকে ৪১ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত।

এ ছাড়া পড়াশোনা শেষে যদি তারা দক্ষ পেশায় চাকরি না পান, তবে দেশে ফিরে যেতে হবে। সরকারের ভাষ্য, অভিবাসন কমাতেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আর্থিক চাপে বিশ্ববিদ্যালয় খাত

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তনের কারণে ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয় খাত বড় ধরনের আর্থিক চাপের মুখে পড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংগঠন ইউনিভার্সিটিজ ইউকে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বছরে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ড আয় হারাতে পারে।

সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন বলেন, “যেমন ভেটেরিনারি মেডিসিন কোর্সে একজন শিক্ষার্থীর জন্য ব্যয় প্রায় ২০ হাজার পাউন্ড। এর প্রায় অর্ধেকই আসে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এই আয়ের উৎস কমে গেলে, ব্রিটিশ শিক্ষার্থীদের জন্য এসব ব্যয়বহুল কোর্স চালু রাখা কঠিন হবে।”

রাসেল গ্রুপের শঙ্কা

যুক্তরাজ্যের শীর্ষ ২৪টি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন রাসেল গ্রুপ জানায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে তাদের সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২ লাখ ৫৭ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেছে। এদের ফি থেকে আসে অনেক প্রতিষ্ঠানের এক পঞ্চমাংশ থেকে এক তৃতীয়াংশ আয়।

২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ফি থেকেই প্রতিজন ব্রিটিশ শিক্ষার্থীর কোর্সে গড়ে ২,৫০০ পাউন্ড ঘাটতি মেটানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

সরকারের ব্যাখ্যা

যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, নতুন কর থেকে যে অর্থ আসবে তা উচ্চশিক্ষা খাতে পুনঃবিনিয়োগ করা হবে। এতে করে ব্রিটিশ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আগ্রহী হবে, পাশাপাশি দেশীয় জনশক্তির দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব হবে—যা ভবিষ্যতে বিদেশি কর্মীদের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন

ইউনিভার্সিটিজ ইউ কে বলছে, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা টিউশন ফি, গবেষণায় অপ্রতুল বরাদ্দ এবং বিদেশি শিক্ষার্থী কমে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় খাত এখনই চাপে রয়েছে। এর মধ্যে নতুন কর চাপিয়ে দিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

ভিভিয়েন স্টার্ন বলেন, “এমন কর কোনোভাবেই সহায়ক নয়। বরং সরকারের উচিত উচ্চশিক্ষা খাতকে টিকিয়ে রাখতে কার্যকর ও গঠনমূলক সমাধান দেওয়া।”

আলীম/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে