ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

দ্য হিন্দু বিজনেস লাইনের প্রতিবেদন

বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল সংযোগ প্রকল্প স্থগিত

২০২৫ এপ্রিল ২০ ২৩:২১:৩১
বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল সংযোগ প্রকল্প স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অবকাঠামো ভিত্তিক সংযোগ প্রকল্পগুলোর সাময়িক স্থগিতকরণ কেবল অর্থনৈতিক দিক থেকে নয়, বরং কৌশলগত দিক থেকেও গভীর তাৎপর্য বহন করে। ভারত ও বাংলাদেশের রেলপথের যোগাযোগ সম্প্রসারণ কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়; এটি একটি আঞ্চলিক কূটনৈতিক কৌশল হিসেবেও কার্যকর ছিল।

ভারতের উদ্যোগ ছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা, যা সংকীর্ণ এবং কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ 'সিলিগুড়ি করিডোর' ব্যবহারের ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়ক হতে পারতো। এই লক্ষ্যে ভারত সরকারের ৫,০০০ কোটি রুপির একটি রেল প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, যার মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা, খুলনা-মোংলা, এবং ঢাকা-জয়দেবপুর প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।

কিন্তু বর্তমানে দিল্লি থেকে ঢাকাগামী উন্নয়নের সেই ট্রেন স্থগিত করা হয়েছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই স্থগিতাদেশ তিনটি বড় প্রকল্প এবং পাঁচটি সম্ভাব্য রুটের জরিপকাজে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ, যেখানে ১২.২৪ কিমি দীর্ঘ রেলপথের ৬.৭৮ কিমি বাংলাদেশ অংশ।
  • খুলনা-মোংলা রেলপথ, যা মোংলা বন্দরের সঙ্গে দেশের প্রধান রেল নেটওয়ার্ক যুক্ত করার উদ্দেশ্যে ছিল।
  • ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর রেল সম্প্রসারণ, যা দেশটির এক্সিম ব্যাংকের সহযোগিতায় চলছিল।

দিল্লি এখন বিকল্প পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে, বিশেষ করে ভুটান এবং নেপালের দিকে। নতুন পরিকল্পনায় বিহার এবং উত্তর প্রদেশে রেলপথের উন্নয়ন, নেপাল-ভারত সংযোগ প্রকল্প এবং পশ্চিমবঙ্গ-বিহার সংযোগে নতুন রেলপথ নির্মাণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করেছিল; কিন্তু এখন এই প্রকল্পগুলোর স্থগিতাদেশ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। ভারতীয় সহায়তায় গড়ে ওঠা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো কর্মসংস্থান, পণ্য পরিবহণ এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা উন্নত করার সম্ভাবনা সম্বলিত ছিল, যা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

এদিকে, ভারতের যুক্তরাজ্যের নীতির ইঙ্গিত দেয় যে, কৌশলগত স্বচ্ছতা এবং স্থিতিশীলতার অভাব হলে বিকল্প পথ খোলাও রয়েছে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য চীনের প্রভাব বৃদ্ধির একটি নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে অবকাঠামো খাতের মধ্যে।

সার্বিকভাবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উন্নয়ন এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই অবস্থায় বাংলাদেশ কৌশলগত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়ার সুযোগ খুঁজছে।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে