ঢাকা, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

গয়না ছেড়ে এবার বার-কয়েনে ঝুঁকছে বিনিয়োগকারীরা

২০২৫ এপ্রিল ১৯ ১৭:০৮:৫২
গয়না ছেড়ে এবার বার-কয়েনে ঝুঁকছে বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি দুবাইয়ের স্বর্ণবাজারে নজিরবিহীনভাবে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি গ্রাম ৩৭১ দিরহামে পৌঁছেছে, যা ১৬ এপ্রিল রেকর্ড হওয়া সর্বোচ্চ ৩৭২.২৫ দিরহামের থেকে মাত্র ১ দিরহাম কম। অন্যদিকে, ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৪০০ দিরহামের গণ্ডি অতিক্রম করেছে। এমন দামে সাধারণ ক্রেতাদের গয়না কেনা কঠিন হয়ে পড়ছে। তবুও বাজারে ক্রেতার অভাব নেই, বরং ভিন্নধর্মী এক নতুন শ্রেণির ক্রেতার উত্থান ঘটেছে যারা গয়নার পরিবর্তে স্বর্ণের বার ও কয়েনকে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করছেন।

এই পরিবর্তনের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কয়েকটি বিষয় এক. খরচ বাঁচানো, দুই. ভবিষ্যতে মূল্য আরও বাড়বে এমন প্রত্যাশা, তিন. গয়নার তুলনায় স্বর্ণের বারের পুনঃবিক্রয় মূল্য বেশি।

গয়না কিনলে মেকিং চার্জ, ডিজাইনের খরচসহ অনেক বাড়তি ব্যয় যুক্ত হয়, যা পুনরায় বিক্রির সময় আর ফেরত আসে না। পক্ষান্তরে, স্বর্ণের বার বা কয়েন কিনলে এই বাড়তি খরচ এড়ানো যায় এবং ভবিষ্যতে সহজেই বিক্রি করা যায়।

মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামলাল আহমেদ বলেন “আগে যারা শুধুমাত্র গয়না কিনতেন, তারাও এখন এসে সরাসরি বলছেন ‘বার দেখান’। আমরা এমন পরিবর্তন এর আগে কখনও দেখিনি।”

তাদের হিসাব অনুযায়ী, ইউএই-ভিত্তিক তাদের গ্রাহকদের মধ্যে স্বর্ণের বার ও কয়েন কেনার হার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

১. মেকিং চার্জ বেশি হওয়ায় গয়না এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।

২. বারের রিসেল ভ্যালু বেশি এবং তাৎক্ষণিক বিক্রির সুবিধা বেশি।

৩. আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হিসেবে তা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স ৩,৩১৫ মার্কিন ডলার, যা কিছুদিন আগেই ৩,৩৫০ ডলার স্পর্শ করেছিল। বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বড় আকারে স্বর্ণ কিনছে, যার ফলে বাজারে র‍্যালি চলমান রয়েছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, বছর শেষে এই দাম ৩,৭০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, বাজারে একসময় ‘profit-taking’ বা লাভ তুলে নেওয়ার প্রবণতা শুরু হতে পারে। বড় বিনিয়োগকারীরা লাভজনক অবস্থায় কিছু স্বর্ণ বিক্রি করলে দাম সাময়িকভাবে পড়ে যেতে পারে ২,৯০০ ডলারে, যা হবে একটি ‘বাইং উইন্ডো’ বা কেনার সুযোগ। বিশেষ করে যারা গয়নার জন্য অপেক্ষা করছেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে আদর্শ সময়।

দুবাইয়ের বাজারে এই পরিবর্তন একটি বড় মানসিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। যেখানে একসময় স্বর্ণ মানেই ছিল অলংকার, এখন সেটি একাধিক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর জন্য পরিণত হয়েছে একটি নিরাপদ সম্পদে। উচ্চমূল্য সত্ত্বেও এই বিনিয়োগে ঝোঁক কমছে না, বরং মানুষ কৌশল পরিবর্তন করে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে