ঢাকা, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ব্রোকারহাউজের লেনদেনে উৎসে কর কমানোর দাবি

২০২৫ এপ্রিল ১৩ ১০:০০:০০
ব্রোকারহাউজের লেনদেনে উৎসে কর কমানোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজারে ব্রোকারহাউজগুলোর লেনদেনের উপর বর্তমান উৎসে করের হার কমানোর দাবি জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। একইসঙ্গে, লেনদেনে লোকসানের ক্ষেত্রেও এ কর সমন্বয়ের সুযোগ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি তুলে ধরেন ডিবিএ নেতারা।

ডিবিএ নেতারা বলেন বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলো সিকিউরিটিজ লেনদেনের মূল্য পরিশোধকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর মাধ্যমে ০.০৫ শতাংশ হারে উৎসে কর প্রদান করে থাকে। অথচ এই কর ব্রোকারদের মোট গ্রস প্রাপ্তির প্রায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

তারা জানান ২০০৫ সালের অর্থ আইনে এই করের হার ছিল মাত্র ০.০১৫ শতাংশ, যা সময়ের সাথে অনেকগুণ বেড়েছে। এতে করে দেশের অন্যান্য খাতের তুলনায় শেয়ারবাজারের ব্রোকারদের উপর করের বোঝা অস্বাভাবিক রকম বেশি পড়ে যাচ্ছে।

ডিবিএ-র তথ্য মতে পার্শ্ববর্তী ও উন্নত দেশগুলোতে এই করের হার অনেক কম। যেমন—

ভারতে: ০.০৫%

পাকিস্তানে: ০.০০০৬৫%

সিঙ্গাপুরে: ০.০০৭৫%

হংকংয়ে: ০.০০৫৬৫%

এছাড়া মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও তুরস্কে সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর কোনো উৎসে করই নেই।

ডিবিএ হিসাব দিয়ে জানায় এক লাখ টাকার লেনদেনে বাংলাদেশে উৎসে কর দিতে হয় ৫০ টাকা, যেখানে ভারতের ক্ষেত্রে ১০ রুপি, পাকিস্তানে মাত্র ৬৫ পয়সা।

ডিবিএ নেতারা অভিযোগ করে বলেন বর্তমানে শেয়ারবাজারের অবস্থা দুর্বল, এবং কোনো ব্রোকারহাউজই মুনাফা করতে পারছে না। সর্বশেষ হিসাববছরেও সব প্রতিষ্ঠান লোকসান দিয়েছে।

তবুও কর দিতে হচ্ছে যা অন্যায্য এবং আয়কর আইনের মূল দর্শনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ আয়কর সাধারণত নিট মুনাফার উপর ধার্য হওয়ার কথা।

তারা বলেন, লেনদেনের গতি বাড়াতে হলে এবং শেয়ারবাজারে টিকে থাকতে হলে এই উৎসে কর কমানো এবং সমন্বয়ের সুযোগ রাখা জরুরি।

ডিবিএ নেতারা আক্ষেপ করে বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে নতুন গতি এনেছে। কিন্তু শেয়ারবাজারে এখনো উপেক্ষার ছাপ স্পষ্ট।

তারা বলেন, সম্প্রতি দেশে একটি বড় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশ নিলেও শেয়ারবাজার ছিল সেখানে অনুপস্থিত। কোনো বুথ বা সেমিনারে শেয়ারবাজারের অংশগ্রহণ ছিল না।

তারা বলেন অথচ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যখন কোনো দেশে বিনিয়োগ করেন, তখন তারা এক্সিট রুট বা বিনিয়োগ প্রত্যাহারের পথ নিয়ে ভাবেন। শেয়ারবাজারই একমাত্র জায়গা, যেখানে সহজে এক্সিট নেওয়া যায়। সুতরাং, বিনিয়োগ আকর্ষণে শেয়ারবাজারকে সামনে আনা জরুরি।

ডিবিএ নেতারা বলেন শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে হলে উৎসে করের হার যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনা এবং লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর সমন্বয়ের সুযোগ রাখা এখন সময়ের দাবি।

তারা আশা প্রকাশ করেন সরকার বৃহত্তর উন্নয়নের স্বার্থে শেয়ারবাজারের প্রতি গুরুত্ব দেবে এবং কর নীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনবে।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ডিবিএ প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম।

উপস্থিত ছিলেন:

ডিএসই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী

ডিবিএ ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোঃ সাইফুদ্দিন, সিএফএ

ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন

লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ এমডি মোঃ নাসির উদ্দিন চৌধুরী

ব্র্যাক ইপিএস সিকিউরিটিজ সিইও আহসানুর রহমান

ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ সিইও সুমন দাস

সিটি ব্রোকারেজ এমডি আফফান ইউসুফ প্রমুখ।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে