ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

কোটা না মেধা: সরকার ফিরিয়ে আনছে সেই বিতর্কিত কোটা

২০২৫ মার্চ ০৪ ১১:৪৭:২৩
কোটা না মেধা: সরকার ফিরিয়ে আনছে সেই বিতর্কিত কোটা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৪ সালে দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনার মধ্যে অন্যতম ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন। ২০২৪ সালের শুরুতে, দেশের সাধারণ জনগণ এবং ছাত্ররা কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু করে, যা পরবর্তীতে গণমানুষের বৃহত্তর আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। ছাত্রদের এই আন্দোলনটি সরকারের দমন-পীড়নের কারণে আরও তীব্র হয়ে ওঠে, যার ফলে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে।

জুলাই মাসে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন, যা মূলত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এবং চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল, সরকারের দমন-পীড়নের কারণে একটি গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়।

কিন্তু, এখন দেখা যাচ্ছে যে, সেই আন্দোলনের ফলস্বরূপ উঠানো কোটা সমস্যাটির আবার পুনরায় ফিরে আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, জুলাই বিপ্লবের শহীদদের পরিবার এবং গুরুতর আহতদের জন্য সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এছাড়া, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫% কোটা সংরক্ষিত থাকবে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের জন্য।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম মুখ, মহিউদ্দিন রনি, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, "কোটাকে আবার ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের শহীদরা প্রাণ দেননি"। তিনি বলেন, “যে কোটার বিরুদ্ধে এত কিছু হলো, সেই কোটাকে আবার কেন ফিরিয়ে আনা হচ্ছে? আমরা তো মেধার ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে চাই।”

এছাড়া, ছাত্রঅধিকার পরিষদ এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এ বিষয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছে। ছাত্রঅধিকার পরিষদ নেতা বিন ইয়ামিন মোল্লা মন্তব্য করেছেন যে, "২০১৮ সালে যে আন্দোলন কোটা সংস্কারের জন্য হয়েছিল, সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়, এবং এই কোটাব্যবস্থার বিলোপের জন্য তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে"।

সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবার এবং গুরুতর আহতদের জন্য সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আহতদের মধ্যে যারা সারা জীবনের জন্য অক্ষম হয়ে গেছেন, তাদের জন্য মাসিক ভাতা এবং চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়া, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ৫% কোটা সংরক্ষিত থাকবে।

এই সিদ্ধান্তে দেশের নানা রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, শহীদ পরিবারদের মর্যাদা দেওয়ার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, যে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তারা এত তীব্র আন্দোলন করেছিলেন, সেই কোটা আবার চালু করার পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য সন্দেহজনক।

বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং আন্দোলনকারীরা মনে করছেন যে, বর্তমান সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনের চেতনার বিপরীতে দাঁড়িয়ে কোটা পুনরায় চালু করছে, যা জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতি আবার নতুন আন্দোলনের জন্ম দিতে পারে।

এনামুল/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে