ঢাকা, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

বিশ্ব বাজারে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৬ ০৯:৩৫:১৯
বিশ্ব বাজারে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, শ্রমিক অসন্তোষ এবং অন্যান্য সংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিকাশ অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ১০.৩৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮.৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমের দেশগুলোর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর কারণে পোশাক রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দোকানগুলো ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে বড় পরিমাণে কার্যাদেশ বাড়িয়েছে। এছাড়া, পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে।

তবে, বাংলাদেশের পোশাক খাত মূল্যস্ফীতি, বিঘ্নিত সরবরাহ ব্যবস্থা, জ্বালানি তেলের অস্থিতিশীল দাম, এবং পরিবহন খরচের মতো নানা সংকট মোকাবিলা করতে হয়েছে। যদিও এসব সংকট ছিল, তবুও প্রধান রপ্তানি বাজারগুলোতে পোশাকের চাহিদা ব্যাপক ছিল।

গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ব্যাপক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রপ্তানি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছিল। তবে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোয় সেসব বাজারে পোশাকের খুচরা বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পোশাক প্রস্তুতকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কম শ্রম খরচ এবং শক্তিশালী সরবরাহ ব্যবস্থা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধির মূল কারণ। বর্তমানে দেশের পোশাক খাত মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ১১.৬৮ শতাংশ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রধান গন্তব্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, কানাডা এবং বেলজিয়াম। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসব দেশে মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ৭০ শতাংশ গেছে। এসব দেশ থেকে আয় আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৭.১৩ শতাংশ বেড়েছে।

রপ্তানি আয়ের বিশ্লেষণ:

নিটওয়্যার রপ্তানি: আগের প্রান্তিকের তুলনায় ২.৬১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৪৮ বিলিয়ন ডলারে।

ওভেন পোশাক রপ্তানি: ১৭.২৩ শতাংশ বেড়ে রপ্তানি হয়েছে ৪.৮৮ বিলিয়ন ডলারে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় যে, পোশাক রপ্তানিতে ব্যবহারযোগ্য কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রস্তুতকারকরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কাঁচামালের আমদানি মূল্য ৪.০৩ বিলিয়ন ডলার, যা মোট পোশাক রপ্তানি আয়ের ৩৯ শতাংশ।পোশাক খাতের শক্তিশালী স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি:

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক চাহিদা ও উৎপাদন দক্ষতা বেড়ে যাওয়ার ফলে চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বরে দেশের পোশাক খাতে শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।

এটি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন, যেখানে দেশটি বৈশ্বিক পোশাক বাজারে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে