ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

ট্রাম্পের আমলে বাংলাদেশ নিয়ে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে

২০২৫ জানুয়ারি ২১ ০৭:৫৩:২২
ট্রাম্পের আমলে বাংলাদেশ নিয়ে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড বিশ্বব্যাপী যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সিদ্ধান্তের ওপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব পড়ে।

বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই প্রভাব আরো বেশি লক্ষ্য করা যায়, কারণ তিনি কখন কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা পূর্বাভাস করা প্রায় অসম্ভব।

আগের মেয়াদের মতো (২০১৭-২০২০) ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদেও প্রধান সিদ্ধান্তগুলো নিজস্বভাবে নেবেন বলেই প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের জন্য কিছু মার্কিন নীতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকার ও উন্নয়ন সহযোগিতা এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে তাঁরা বড় ধরনের পরিবর্তনের পূর্বাভাস দিচ্ছেন। এ ধরনের পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশের নীতিনির্ধারণীতেও প্রভাব পড়তে পারে।

এ বিষয়ে সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী, তাই তার মনোভাব ও আচরণ রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায় ভিন্ন হবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়কে গুরুত্ব দেন না; যা তার পূর্ববর্তী মেয়াদে প্যারিস চুক্তি থেকে বিচ্ছেদের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন

বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি দেশের অস্তিত্বের উপর প্রভাব ফেলছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তগুলো যদি জলবায়ুকে গুরুত্ব না দেয়, তাহলে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়তে পারে। এজন্য সাবেক কূটনীতিক উল্লেখ করেন, বাংলাদেশকে এই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

উন্নয়ন সহযোগিতা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর বাংলাদেশকে প্রায় ২০ কোটি ডলার উন্নয়ন সহযোগিতা হিসেবে সহায়তা দেয়। এই অর্থ স্বাস্থ্য, সুশাসনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হয়। তবে ট্রাম্প নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ খরচ কমানোর উদ্যোগ নিতে পারেন।

এ বিষয়ে আরেক সাবেক কূটনীতিক বলেন, “ট্রাম্প ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পর্ককে লেনদেন ভিত্তিক সহযোগিতার দিকে বেশি মনোযোগী হতে পারেন।”

তিনি বলেন, মার্কিন উন্নয়ন সহযোগিতা সাধারণত শর্তযুক্ত নয়, কিন্তু আগামীতে তা কমে যেতে পারে, বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে।

নাগরিক অধিকার

ডেমোক্র্যাট সরকারের অধীনে নাগরিক অধিকার যেমন গণতন্ত্র, সুশাসন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা গুরুত্ব পায়। ট্রাম্পের সময় এসব বিষয়ের গুরুত্ব হ্রাস পায়।

সাবেক এ কূটনীতিক জানাচ্ছেন, রিপাবলিকান দল গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারের প্রতি কম গুরুত্ব দেয় এবং ট্রাম্পের কাছে এই বিষয়গুলোর গুরুত্ব আরও কম হতে পারে।

নতুন রাষ্ট্রদূত

গত বছরের শুরুর দিকে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকা ত্যাগ করেন। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে চীনে দায়িত্বরত মিশন উপপ্রধান ডেভিড মিলির নাম ঘোষণা করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলের কারণে ডেভিড মিলির পরিবর্তে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এজন্য একটি অভিজ্ঞ কূটনীতিককে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, যিনি বর্তমান নভেম্বরে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ

বাংলাদেশে নতুন মার্কিন বিনিয়োগ আসা ও বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করা হচ্ছে। সাবেক কূটনীতিকরা জানান, “বিনিয়োগের পূর্বশর্ত হচ্ছে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ, যা বাংলাদেশে এখন তেমন আছে বলে মনে হচ্ছে না।” রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনি অনিশ্চয়তার কারণে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।

তাদের মতে, বাংলাদেশের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং যদি বিদেশি রফতানি আদেশ আসে, তবে তা যথাসময়ে সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং জনশক্তির অভাব রয়েছে। অতএব, বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি, মার্কিন ক্রেতাদের আগ্রহ এবং ক্রয় আদেশ সংগ্রহই ভবিষ্যতে বাণিজ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখবে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে