ঢাকা, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

‘সবচেয়ে বড় স্বৈরাচারী ও বিধ্বংসী প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক’

২০২৪ নভেম্বর ১৭ ১৯:৪০:১৯
‘সবচেয়ে বড় স্বৈরাচারী ও বিধ্বংসী প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ – এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবচেয়ে বড় স্বৈরাচারী ও বিধ্বংসী প্রতিষ্ঠান।

রোববার (১৭ নভেম্বর) ঢাকার মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারের অডিটোরিয়ামে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ সংস্কার: অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডা' শীর্ষক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

আবদুল আউয়াল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বৈরাচারী আচরণ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ধ্বংস করার জন্য দায়ী। সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নতুন করে তৈরি করতে হবে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘সবাই সংস্কার সংস্কার করছে। কিন্তু কে এটা করবে? অন্তর্বর্তী সরকার? এটা চলমান একটি প্রসেস, স্বল্প সময়ে একটি রাষ্ট্রের পুরো সংস্কার হতে পারে না। আমি ৮০-র দশক থেকে দেখে আসছি; আজকের এই আলোচিত সমস্যাগুলো সমাধান হচ্ছে না।’

সবকিছুর আগে রাজনৈতিক সংস্কার করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় চল্লিশ বছরে যা সম্ভব হয়নি— ভবিষ্যতেও হবে না। দুর্নীতিবাজরা রিফর্ম করলে সেটা থেকে সুফল পাওয়া যাবে না। গত ১৩ বছর রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন থেকে একটি বিশেষ গোষ্ঠী তাদের সুবিধা নিয়েছে। তাই সবার আগে রাজনীতির সংস্কার করতে হবে।

এ সময় সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কিছু ব্যাংক বন্ধ করার কথা বলেছেন। আমি এখানে দ্বিমত করব, ঢালাওনভাবে ব্যাংক বন্ধ করা্র কথা বলা যাবে না।ব্যাংকিং সেক্টরে কেউ দুর্নীতি করলে তার বিচার করতে হবে, তবে ঢালাওভাবে ব্যাংক বন্ধ করার কথা বলা যাবে না।

সংলাপে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত অধ্যাপক লুৎফে সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আর সংলাপটি সভাপতিত্ব করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, এফআইসিসিআইয়ের সভাপতি জাভেদ আখতার, বিকেএমইএ'র নির্বাহী সভাপতি ফজলী শামীম এহসান, ডিসিসিআই'র সভাপতি আশরাফ আহমেদ ও বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলসহ শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সিস্টেমের পরিবর্তন করতে হবে। বাইরে থেকে আসা অন্তত ১৭টি সিস্টেম পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এখন কিভাবে মেকানিক্যাল সিস্টেম পরিবর্তন করতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক এবং জনগণের ঐক্যমতে শক্তি দরকার। না হলে জনসাধারণের কাছে ভুল মেসেজ যাবে। আমরা পুরো সরকার ব্যবস্থার সংস্কৃতিক পরিবর্তনের কথা বলছি।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া ১০০টি অর্থনৈতিক জোন কোনভাবেই একসাথে রান করা সম্ভব নয়। এখানে যে ধরনের অবকাঠামো গত উন্নয়ন করা দরকার সেটা তো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই এটা কমিয়ে আনবো। কমিয়ে ১০টি বা তারও কম নিয়ে কাজ করা যায় কিনা; সে বিষয়ে সরকার চিন্তা ভাবনা করছে।

এফআইসিসিআইয়ের সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হলে দেশের বিশ্বাসযোগ্য থাকতে হবে। এনবিআর বলতেছে ট্যাক্স ২৫ শতাংশ কিন্তু উৎপাদনকরীদের অনেক ক্ষেত্রেই ৪৫ শতাংশের বেশি টেক্স দিতে হচ্ছে। আমাদের অবশ্যই কাঠামোগত পরিবর্তন করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা যেন মিডেল ইনকাম ট্রাপে পড়ে না ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা লক্ষ্য রেখে রিফর্ম করতে হবে। এটার জন্য কোরিয়া মডেল ফলো করা যেতে পারে।

সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি থেকেই মূল সমস্যা শুরু হয়। এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে ঘুষের ওপর ঘুষ চলে। বিশেষ করে- করের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। এনবিআরকে ভিন্ন ভিন্ন পলিসি দিয়ে দুর্নীতি কমানো সম্ভব। এ বিষয়ে আরও একটি প্রোগ্রাম করা যেতে পারে। দুর্নীতি কমানোর জন্য সৎ মানুষ থাকলেই হবে না। সততার পাশাপাশি ইতিবাচক মানসিকতা জরুরি।

তারিক/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে