ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

পিএসসি’র প্রশ্নফাঁসে জড়িত আরও ১০-১২ কর্মকর্তা

২০২৪ জুলাই ১১ ১২:০১:৫২
পিএসসি’র প্রশ্নফাঁসে জড়িত আরও ১০-১২ কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে অনুষ্ঠিত প্রশ্নপত্র ফাঁস। বিষয়টির আলোচনা যত বাড়ছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সম্পৃক্তদের সংখ্যাও ততো বাড়ছে।

সর্বশেষ অভিযোগ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এবং বিভিন্ন নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির একজন সহকারী পরিচালকসহ আরও ১০-১২ জন কর্মকর্তা জড়িত।

রাষ্ট্রের জনবল নিয়োগের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান পিএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁসে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁদের কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এই কর্মকর্তাদের পল্টন থানায় করা প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় আটক দেখানো হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পিএসসির পুরো পরীক্ষা-প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে কীভাবে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনা যায়, এ বিষয়ে সরকারের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

এদিকে, পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বুধবার (১০ জুন) সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় পিএসসির অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। এসব ঘটনায় আরও যেসব কর্মকর্তা জড়িত, তাঁদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে বলেও জানতে পেরেছি।’

অন্যদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে ও ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সাইম হোসেনের জামিন গতকাল নামঞ্জুর করেন আদালত।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গত সোমবার সিআইডি ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে ছয়জনই পিএসসিতে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও রয়েছেন। তাঁরা এক যুগে বিসিএসসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

তদন্তকারীরা বলছেন, এই পর্যন্ত পিএসসির যত প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, সেগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন ভেতরের কর্মকর্তারা। সরাসরি প্রশ্ন প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত না থেকেও কীভাবে তাঁরা প্রশ্ন সংগ্রহ করেছেন, তা ভাবিয়ে তুলেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, ফাঁস করা প্রশ্ন গণহারে না ছেড়ে তা বিক্রি করতে পিএসসির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মাধ্যমে একটি চক্র গড়া হয়। এরা নির্বাচিত প্রার্থীদের কাছে ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন দিতেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পিএসসির পদস্থ চার কর্মকর্তা প্রশ্নপত্র ফাঁসে সরাসরি জড়িত না থাকলেও পুরো বিষয়টি জানতেন। তাঁরা নিজেদের মুখ বন্ধ রাখতে লাখ লাখ টাকা নিতেন। ওই চারজনসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নজরদারিতে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে, নাকি অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পিএসসির আরও বেশ কিছু কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে। যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার পিএসসির দুই উপপরিচালক আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির, ডেসপাচ রাইডার খলিলুর রহমান ও অফিস সহকারী সাজেদুল ইসলামকে গত মঙ্গলবার পৃথক পাঁচটি প্রজ্ঞাপনে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পিএসসি। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দিয়েছে পিএসসি।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে