ঢাকা, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

বেনজীরের সম্পদ দেখে চোখ ছানাবড়া দুদক কর্মকর্তাদের

২০২৪ জুন ১৩ ০৮:৫৫:৩২
বেনজীরের সম্পদ দেখে চোখ ছানাবড়া দুদক কর্মকর্তাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পদ দেখে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের চোখ ছানাবড়া। তাঁর অবৈধ সম্পদের পাল্লা দিন দিনই ভারীই হচ্ছে। বেরিয়ে আসছে সম্পদের নতুন নতুন তথ্য। আর এই হিসাব মেলাতে রীতিমতো হিমশিমও খাচ্ছে কমিশনের অনুসন্ধানদল।

দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বেনজীর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদের হিসাব মেলাতে অনুসন্ধানদলের প্রত্যেক সদস্যকে দিনরাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। কাজের পরিধির ব্যাপকতায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার এবং শনিবারও অনুসন্ধানদলের সদস্যরা কাজ করছেন। অনুসন্ধানদলের রীতিমতো ঘাম ঝরছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১২ জুন) পর্যন্ত তিন দফা বেনজীর পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

তিন দফায় আদালতের আদেশে জব্দ করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৬৯৮ বিঘা জমি, গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট, রূপগঞ্জে ১০ কোটি টাকা মূল্যের বাংলো, উত্তরায় সাততলা বাড়ি, আদাবর-বাড্ডায় আটটি ফ্ল্যাট, সাভারে জমি, বিভিন্ন এলাকায় মাছ ও গরুর খামার, টেলিভিশন চ্যানেল, গার্মেন্টস ও ১৯টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, ২৩টি ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট), চারটি ক্রেডিট কার্ড ও ৯টি বিও অ্যাকাউন্ট এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।

আদালতের প্রথম দফা আদেশ হয় ২৩ মে। ওই দিন বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক স্বজনের নামে থাকা ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি ক্রোক বা জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। একই দিন বেনজীর এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে থাকা ২৩টি ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট), চারটি ক্রেডিট কার্ড ও ছয়টি বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় দফায় ২৬ মে একই আদালত বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে থাকা মাদারীপুরে ২৭৬ বিঘা জমি এবং বেনজীর পরিবারের নামে থাকা গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটও জব্দের আদেশ দেন। একই দিন বেনজীর এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও তিনটি বিও হিসাব এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। সাভারের কিছু জমিও রয়েছে একই আদেশের মধ্যে।

সর্বশেষ গতকাল ১২ জুন তৃতীয় দফায় তাঁদের নামে বান্দরবানে ৭৫ বিঘাসহ মোট ৭৭ বিঘা জমি, রূপগঞ্জে ১০ কোটি টাকা মূল্যের বাংলো, উত্তরায় সাততলা বাড়ি, আদাবর-বাড্ডায় আটটি ফ্ল্যাট, মাছ ও গরুর খামার, টেলিভিশন চ্যানেল ও গার্মেন্টসের শেয়ারের তথ্য পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে বেনজীর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা বেসরকারি সিটিজেন টেলিভিশন ও টাইগার ক্রাফট অ্যাপারেলস লিমিটেডের শেয়ার অবরুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদক সূত্র জানায়, আদালতের আদেশের মাধ্যমে এরই মধ্যে বেনজীর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদগুলো পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। বেনজীর এসব সম্পদ বিক্রি করতে পারবেন না। ক্ষমতায় থাকাকালে আলাদীনের আশ্চর্য চেরাগের স্পর্শে গড়ে তোলা বেনজীরের বিশাল সাম্রাজ্য কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, একজন সরকারি চাকরিজীবী তাঁর চাকরির মাধ্যমে এত সম্পদ উপার্জন করতে পারেন না। দোষী সাব্যস্ত হলে বিভিন্ন আইনে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড হবে সদ্য সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের।

শেয়ারনিউজ, ১৩ জুন ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে