ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

কুমিল্লায় বাহার-সাক্কুর বাক-যুদ্ধ ভাইরাল

২০২৩ সেপ্টেম্বর ১৪ ০৯:৪৭:৪১
কুমিল্লায় বাহার-সাক্কুর বাক-যুদ্ধ ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : একজন আওয়ামী লীগের সংসদ-সদস্য। আরেকজন বিএনপিদলীয় সাবেক সিটি মেয়র। একটা সময় ছিল যখন অনেক বিতর্ক সত্ত্বেও দুজনের সম্পর্ক মধুর ছিল। গত পৌরসভা নির্বাচনের পর থেকে তাদের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই নিজ নিজ দলের সভায় একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলেন।

তারা দুজন হলেন, কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও বিএনপির সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। সম্প্রতি এমপি বাহা সাবেক মেয়র সাক্কুকে 'ডাকাত' আখ্যা দিয়ে তার সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং মোটা ঘুষের বিনিময়ে ভবনের নকশা অনুমোদনের অভিযোগ তোলেন।

এদিকে একাধিক সভায় এমপি বাহারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে পালটা বিভিন্ন অভিযোগ করেন সাক্কু। তাদের এই বাগযুদ্ধ এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। এ নিয়ে নগরজুড়ে চলছে আলোচনার ঝড়।

২০১২ ও ২০১৭ সালে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন সাক্কু। এ সময় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সময় এমপি বাহার ও সাক্কুর মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এতে সাক্কু তার নিজের লের মধ্যেও বেশ ক্ষোভের মুখে পড়েন। ২০২২ সালের নির্বাচনে বাহারের অনুসারী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর থেকে বাহার ও সাক্কুর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।

গত ৫ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ মাঠে মহানগর আওয়ামী লীগের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সভায় এমপি বাহার বলেন, সাক্কু ডাকাত ছিল, সে কুমিল্লার মানুষের টাকা লুট করে কানাডায় ব্যবসা করেছে। এরপর ৭ সেপ্টেম্বর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভায় তিনি বলেন, "সাক্কু তিন মেয়াদে কুমিল্লার মেয়র ছিলেন। কিন্তু কোনো উন্নয়ন হয়নি। সাক্কু মেয়র ছিলেন, আকবর হোসেন মন্ত্রী ছিলেন। তারপরও কোনো অগ্রগতি হয়নি। আমি যখন এমপি হয়েছি, টাকা এনেছি, সাক্কু সাহেব লুট করেছেন।

তিনি বলেন, কুমিল্লার মানুষের রক্ত বিক্রি করে ৭৮টি ফ্ল্যাট বানিয়েছেন। এই ৭৮টি ফ্ল্যাট কোথা থেকে এল? সারা শহরে টাকা দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ভবনের প্ল্যান পাস করেছেন। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর মুরাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভায় সাক্কুর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে ৮ সেপ্টেম্বর নানুয়াদিঘির পাড়ে নিজ বাসভবনে ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির মতবিনিময় সভায় সাক্কু এমপি বাহারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘উনার (বাহার) জিদ হলো-আমি কেন নির্বাচন করলাম। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমি বিএনপির মনোনয়ন চাইব। দল মনোনয়ন না দিলে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করব। আমি মানুষের ভালোবাসা চাই। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে।’

সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘১২ বছর আমি ভালো ছিলাম। এখন খারাপ হয়ে গেছি। একযুগ সংসার করেছি। কাজের স্বার্থে উনার সঙ্গে আমার আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। এখন আমি খারাপ। উনি এমপি, সরকার উনার। দেশে আইন আছে, প্রশাসন আছে। বিচার করবে সরকার, প্রশাসন। সিটি করপোরেশনে সব ফাইল আছে। উনাকে (এমপি) বলেন আমার বিরুদ্ধে মামলা দিতে।’

সাক্কু বলেন, ‘আমি যদি চুরি করে থাকি? মামলা দেন। আপনি (এমপি) যদি বাঘের বাচ্চা হয়ে থাকেন আমার অনিয়ম বের করে মামলা দেন। ইনকাম ট্যাক্স অফিস আছে। তারা তদন্ত করবে। আমি ফেস করব।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হউক আমি সব বলব। এখন বলার সময় হয়নি। এক হাতে তালি বাজে না। ভাই, এক হাতে কখনো তালি বাজে না। আমি চোর, উনি কিছু না। আমি ডাকাত, উনি কিছু না।’

দুই নেতার এই বাকযুদ্ধ এখন টক অব দ্য টাউন। এ নিয়ে শহরজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ফেসবুক ও ইউটিউবে মানুষ এসব বক্তব্য শুনছে। তবে নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এ আসনে দুজন প্রার্থী হবেন তা থেকেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

শেয়ারনিউজ, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে