ঢাকা, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

সুযোগ থাকার পরও ইউরোপে যাচ্ছেন না বাংলাদেশিরা

২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১২:৪০:১৫
সুযোগ থাকার পরও ইউরোপে যাচ্ছেন না বাংলাদেশিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসিফ হায়দার অপু, একজন জার্মান প্রবাসী, সম্প্রতি দুই মাসের ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি ২০১০ সালে জার্মানিতে পড়তে যান এবং বর্তমানে ওভারহাউজেন শহরে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে টিম লিডার হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি নিজের জীবনযাত্রার মান এবং নিরাপত্তার কারণে জার্মানিকেই বসবাসের জন্য বেছে নিয়েছেন এবং তার স্ত্রীকে জার্মানিতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর মতে, জার্মানিতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয় এবং সকল স্তরের মানুষ একটি নির্দিষ্ট জীবনযাত্রার মান বজায় রাখে, কারণ সেখানে প্রতি ঘণ্টা কাজের জন্য সরকারের নির্ধারিত সর্বনিম্ন মজুরি রয়েছে।

আসিফ আরও উল্লেখ করেছেন যে, জার্মানি এবং পুরো ইউরোপ জুড়ে দক্ষ জনশক্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অদক্ষ শ্রমিকদের অভিবাসনের সুযোগ সীমিত, কারণ তারা ভাষা এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই কাজ করতে পারে না। তিনি মনে করেন, যারা উচ্চশিক্ষার (ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি) জন্য যেতে চান, তাদের স্টুডেন্ট ভিসা ক্যাটাগরিতে আবেদন করা উচিত। অন্যদিকে, যারা কাজের অনুমতি নিয়ে যেতে চান, তাদের অবশ্যই দক্ষ কর্মী হতে হবে।

ফিনল্যান্ডে বসবাসকারী আরেক বাংলাদেশি প্রবাসী, সাইফুল ইসলাম, ২০০৫ সালে রোমানিয়া থেকে ইউরোপ জীবন শুরু করেন। তিনি স্টুডেন্ট ভিসায় রোমানিয়ার তিমিসোয়ার ইউনিভার্সিটিতে এসেছিলেন। ২০০৭ সালে রোমানিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হলে তিনি ইউরোপীয় নাগরিকের পারিবারিক সদস্য হিসেবে ফিনল্যান্ডে চলে আসেন। তিনি ১,০০০ ইউরো নিয়ে একটি রক্ষণাবেক্ষণ সেবার ব্যবসা শুরু করেন এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ১০টি রেস্তোরাঁর মালিক হয়েছিলেন। ভ্রমণপ্রিয় হওয়ায় তিনি পরে ৮টি রেস্তোরাঁ বিক্রি করে দেন এবং বর্তমানে ২টি রেস্তোরাঁ ও একটি ক্লিনিং কোম্পানির মালিক।বিএমইটি (জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ১০ লাখ ১১ হাজারেরও বেশি কর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ইউরোপের দেশগুলোতে গেছেন মাত্র ১৬,০৭৭ জন।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞ হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ এবং অন্যান্যরা মনে করেন যে, বাংলাদেশের উচিত বিশ্বব্যাপী চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। বিশেষত স্বাস্থ্যসেবা, হোম কেয়ারের মতো খাতে প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ভাষা জ্ঞান এবং বয়সভেদে যত্ন নেওয়ার মানসিকতাও গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এবং রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর উচিত এইসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া। তাঁরা আরও উল্লেখ করেন যে, প্রতিবেশী দেশগুলো এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে।এছাড়া, অভিবাসন খাতে সরকারের দুর্বলতা এবং কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। সরকারের উচিত ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর সদ্ব্যবহার করে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিতে জোর দেওয়া।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে