ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

গাজীপুরে আলোচিত ইমাম নিখোঁজ রহস্যের পর্দা ফাঁস

২০২৫ অক্টোবর ২৮ ১০:৪৮:০৪
গাজীপুরে আলোচিত ইমাম নিখোঁজ রহস্যের পর্দা ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরের টঙ্গীর টিঅ্যান্ডটি কলোনি জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীর নিখোঁজের ঘটনায় নতুন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর তাঁকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ, এবং তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন— ঘটনাটি অপহরণ নয়, বরং নিজের পরিকল্পনায় পঞ্চগড়ে গিয়েছিলেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

ওই কর্মকর্তা বলেন,“প্রাথমিকভাবে অভিযোগ উঠেছিল যে ইমাম মহিবুল্লাহকে ইসকন (ISKCON) অপহরণ করেছে। তবে তদন্তে দেখা গেছে, তিনি নিজেই শ্যামলী পরিবহনের টিকিট কেটে পঞ্চগড়ে গিয়েছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা তাঁর গতিবিধি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।”

তিনি আরও জানান, ইমাম মহিবুল্লাহর বাসের সহযাত্রী ও সুপারভাইজারকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

“তিনি পুলিশের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাঁর দেওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) তাঁকে আদালতে তোলা হবে, এরপর সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।”

গত ২২ অক্টোবর সকালে টঙ্গীর বাসা থেকে হাঁটতে বেরিয়ে নিখোঁজ হন মুফতি মহিবুল্লাহ। পরদিন (২৩ অক্টোবর) সকালে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের সিতাগ্রাম হেলিপ্যাড এলাকায় মহাসড়কের পাশে তাঁকে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়।

এদিকে আলজাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি ঘটনাটির সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দাবি করেছেন, ইমাম মহিবুল্লাহর দেওয়া অপহরণের বিবরণ বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।

সায়ের বলেন,“তিনি দাবি করেছিলেন, টঙ্গীর শিলমুন এক্সিস লিংক সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে অপহরণ করা হয়। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সকাল ৬টা ৫২ মিনিটে তিনি ঘর থেকে বের হন, ৬টা ৫৩ মিনিটে মসজিদ ছাড়েন এবং ৭টা ১৮ মিনিটে ফিলিং স্টেশনের সামনে দিয়ে একাই দ্রুত হেঁটে যাচ্ছেন।”

ভিডিও ফুটেজে অপহরণের কোনো দৃশ্য পাওয়া যায়নি।সায়েরের বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে,“ফিলিং স্টেশনের চারটি ক্যামেরায় তাঁকে একাই হাঁটতে দেখা গেছে। স্টেশনের সামনে অ্যাম্বুল্যান্স থেমে তাঁকে তোলার কোনো চিত্র নেই। বরং তাঁকে নির্ভয়ে রাস্তা পেরোতে দেখা গেছে।”

ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. সোলেইমানও নিশ্চিত করেছেন,“পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট আমাদের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেছে। অপহরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”

এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে গণমাধ্যমের সামনে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে