ঢাকা, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ জুম বৈঠকেই ধরা খেয়ে গেল ২৮৬ জন

২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১২:০১:১১
‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ জুম বৈঠকেই ধরা খেয়ে গেল ২৮৬ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপ ও রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পলায়ন করেন। এরপর থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জুম মিটিংয়ে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার এবং উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০২৪ সালের শেষের দিকে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত একটি জুম মিটিংকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। ওই সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী দেশ ও বিদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।

সিআইডির ফরেনসিক ও গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীরা অন্তর্বর্তীকালীন বৈধ সরকার উৎখাতের আহ্বান দেন, গৃহযুদ্ধ উসকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার ঘোষণা দেন।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত এই তথ্যের ভিত্তিতে ২০২৫ সালের ৪ মার্চ মন্ত্রণালয় সিআইডিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত ও অভিযোগ দায়েরের অনুমতি দেয়। এরপর ২৭ মার্চ রমনা থানায় মামলা নং-২২২/২০২৫ দায়ের করা হয়, যার ধারাগুলো হলো বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১২১, ১২১(ক) ও ১২৪(ক)।

সিআইডির পাঁচ মাসের তদন্ত শেষে ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রয়েছেন। আদালত তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত তিনটি প্রধান এজেন্ডা — সংস্কার, নির্বাচন ও বিচার — বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সিআইডি এই মামলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১৮ এর বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

মামলার শুনানিতে আসামিদের অধিকাংশ অনুপস্থিত থাকায় আদালত তাদের জন্য জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে হাজির হওয়ার আহ্বান জানান। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না আসলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫১২ ধারায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার চালানো হবে।

ফরেনসিক পরীক্ষায় পলাতক হাসিনাসহ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. রাব্বি আলম ও কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দেশের বিভিন্ন জেলা কারাগারে থাকা ৯১ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, আর বাকি ১৯৫ জন এখনও পলাতক রয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিচার শুরু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বিচারিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিচার ও দায়বদ্ধতা’ এজেন্ডার বাস্তব প্রতিফলন এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের জবাবদিহির শক্তিশালী বার্তা।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে