ঢাকা, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

মুক্তি পেল সেই ‘গণলুটতন্ত্রী আওয়ামী সরকার’

২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৩:৫৫:১৮
মুক্তি পেল সেই ‘গণলুটতন্ত্রী আওয়ামী সরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের বর্তমান শাসনকালে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি, লুটপাট ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে একটি ভিডিও প্রতিবেদনে। এতে দাবি করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের তথাকথিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো জনগণের অর্থ লুটপাটের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।

অর্থ পাচার ও ব্যাংক খাতের অবস্থা

ভিডিও অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে প্রতি বছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে। সব মিলিয়ে পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য নেতৃত্বাধীন ১২ সদস্যের একটি স্বাধীন কমিটির প্রকাশিত শ্বেতপত্রে এই সময়টিকে "অলিগার্কদের উত্থানের দশক" হিসেবে অভিহিত করা হয়।

এস. আলম গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (UCB)—এ ধরনের ব্যাংকগুলো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় দখল করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

ব্যাংক মালিকানা ও পরিচালনা পর্ষদ ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠজনদের হাতে চলে গেছে, যার মাধ্যমে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ আত্মসাৎ করা হয়।

আইএমএফ-এর ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে খেলাপি ঋণ গোপন করার অভিযোগও রয়েছে। বর্তমানে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলাপি ঋণের হার ২১% ছাড়িয়েছে।

শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের দুর্দশা

শেয়ারবাজার সম্পূর্ণভাবে সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলের দখলে চলে গেছে।

সিবলি রুবাইয়াতের নেতৃত্বে নিয়ন্ত্রিত বাজারে নিুমমানের আইপিও অনুমোদন, জাল ব্যালেন্স শিটে নিরীক্ষকের স্বাক্ষর এবং জাল প্লেসমেন্ট ইস্যুর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করা হয়েছে।

মোবাইল ব্যাংকিং খাতে অস্বচ্ছতা: 'নগদ'

'নগদ' মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রকৃত মালিকানা নিয়ে রয়েছে জটিলতা। এটি কেম্যান আইল্যান্ডে নিবন্ধিত একটি কোম্পানির নামে, যার মালিক একজন ব্রিটিশ নাগরিক।

ডাক বিভাগের কোনো আর্থিক বা কারিগরি সক্ষমতা না থাকলেও লাইসেন্স দেওয়া হয়।

'নগদ'-এর মাধ্যমে দরিদ্রদের জন্য নির্ধারিত ১৭ বিলিয়ন টাকার বেশি সরকারি অনুদান আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি ৬.৩ বিলিয়ন টাকার অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি করে জালিয়াতি করেছে বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে।

মেগা প্রকল্প মানেই মেগা দুর্নীতি?

বড় বড় প্রকল্পের নামে দুর্নীতির অভিযোগ এই প্রতিবেদনের বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে।

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের খরচ প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে দ্বিগুণ।

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১ ট্রিলিয়ন টাকা, যা বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।

পায়রা বন্দরের মতো প্রকল্প ভুল স্থানে নির্মিত হয়ে ব্যয়বহুল ভুলে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশের সড়ক নির্মাণ ব্যয় ভারত, চীন এমনকি ইউরোপের তুলনায় ২-৩ গুণ বেশি।

ক্ষমতাসীনদের সম্পদ বৃদ্ধি ও বিদেশে অর্থ পাচার

ওয়েলথ-এক্স-এর ২০১৮ সালের রিপোর্টে ধনীদের সম্পদ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশকে শীর্ষে রাখা হয়।

আজিজ খানসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি সুইস ব্যাংকে অর্থ জমা, কানাডার বেগমপাড়া, লন্ডন ও দুবাইয়ের অভিজাত এলাকায় জমি ক্রয় করেছেন।

ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠরা নিয়মিতভাবে অর্থ পাচার করে বিদেশে দ্বিতীয় বাড়ি কিনেছেন।

ভিডিওর শেষে বলা হয়েছে, দেশের মানুষ এই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা ও লুটপাটতন্ত্রের অবসান চায়। জনগণের ক্ষমতার প্রকৃত উৎস প্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন ও জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে