ঢাকা, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ছেলের গলা কাটার পর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ১২:১৬:৫৮
ছেলের গলা কাটার পর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফরিদপুরের সদরপুরে নিজের পাঁচ বছর বয়সি ছেলেকে গলাকেটে হত্যার পর গলায় রশি দিয়ে মায়ের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে এলাকাবাসীর ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের রমজান শেখের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (২৩) ও তার ৫ বছরের পুত্র সন্তান হুজাইফা।

দু’জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের রমজান শেখের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার তার শিশু ছেলে হুজাইফাকে গলাকেটে হত্যা করে। পরে সুমাইয়া গলায় রশি নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে থানা পুলিশে খবর দেয় এবং সুমাইয়া আক্তারকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

পারিবারিক সূত্র জানায়, সুমাইয়া অন্তঃসত্বা ছিলেন এবং তার সিজারিয়ান ডেলিভারির তারিখ নির্ধারিত ছিল আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর। সুমাইয়ার বাবার নাম রমজান খান। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী গ্রামের বাসিন্দা। ২০২০ সালে সুমাইয়ার সঙ্গে সদরপুরের পূর্বকান্দি গ্রামের মোতালেব মুন্সির ছেলে রমজান মুন্সির বিয়ে হয়।

সুমাইয়ার স্বামী রমজান মুন্সি কয়েক বছর সিঙ্গাপুরে ছিলেন। তবে দুই বছর আগে দেশে ফিরে আসেন এবং আবার বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

নিহত গৃহবধূর শ্বশুর মোতালেব মুন্সি জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়ির কাছে গরুর জন্য ঘাস কেটে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ বাড়িতে চিৎকার শুনে ছুটে এসে তিনি মর্মান্তিক এ ঘটনার মুখোমুখি হন।

তার দাবি, ছেলে রমজান ও সুমাইয়ার মধ্যে সম্পর্ক ভালোই ছিল, তাদের মধ্যে কোনো কলহ ছিল বলে জানা নেই।তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী জানান, দাম্পত্য জীবনে রমজান ও সুমাইয়ার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে নিজ সন্তানকে হত্যা করে মা নিজে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমন একটি হৃদয়বিদারক ঘটনার পেছনে কী কারণ লুকিয়ে রয়েছে, তা জানতে পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, শিশুটিকে গলাকাটা কম্বল পেঁচানো মৃত অবস্থায় ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে। আর তার মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর থানার ওসি সুকদেব রায় বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের খাটের ওপর থেকে শিশুটির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তারকে গলায় রশি নিয়ে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করে এর কোনো কারণ জানা সম্ভব হয়নি।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে