ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

শেয়ারবাজারে নতুন কেলেঙ্কারি: রিয়াজ-শিবলীকে আজীবন নিষিদ্ধের সুপারিশ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ২২:৪৪:২০
শেয়ারবাজারে নতুন কেলেঙ্কারি: রিয়াজ-শিবলীকে আজীবন নিষিদ্ধের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কোয়েস্ট বিডিসি (সাবেক পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার)-এর কার্যক্রমে গুরুতর অনিয়ম, দুর্নীতি ও আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গঠিত একটি অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি।

এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কমিটির পক্ষ থেকে সাবেক বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম-কে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এই বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) বিস্তারিত তদন্তের জন্য পাঠানো উচিত। এছাড়াও, অভিযুক্তদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানা (ন্যূনতম ১ কোটি টাকা) এবং ফৌজদারি মামলা দায়ের করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এলআর গ্লোবালের অধীনে থাকা মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড-কে (বিজিআইসি) অবিলম্বে ফান্ডগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে এবং ফরেনসিক অডিট করার নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ১২টি কোম্পানির অনিয়ম ও দুর্নীতি অনুসন্ধানের জন্য বিএসইসি এই কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোয়েস্ট বিডিসির পরিচালনা পর্ষদ উচ্চমূল্যে শেয়ার কেনা, অবৈধভাবে তহবিলের ব্যবহার, পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি, অনুমোদনবিহীন ব্যবসা পরিচালনা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার মতো গুরুতর অনিয়ম করেছে। একইসঙ্গে, এই পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং রিয়াজ ইসলামের যোগসাজশে এলআর গ্লোবালের ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা দিয়ে পদ্মা প্রিন্টার্সের ৫১ শতাংশ শেয়ার কেনা হয়। প্রতিটি শেয়ার ২৮৯.৪৮ টাকা করে কেনা হয়েছিল, যা বাজার মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি।

পরবর্তীতে, এই ছয়টি ফান্ড থেকে এলআর গ্লোবালের কর্মকর্তাদের কোয়েস্ট বিডিসির পরিচালক পদে বসানো হয়। তদন্ত কমিটি মনে করে, এই পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এলআর গ্লোবাল তাদের ব্যবস্থাপনায় থাকা মিউচুয়াল ফান্ডের তহবিল অবৈধভাবে ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের বড় ক্ষতি করেছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, "তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও অনেক বিষয় কমিশন পর্যবেক্ষণ করছে এবং শিগগিরই সেগুলোর ওপরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

অন্যদিকে, কোয়েস্ট বিডিসির চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান সোহাগ এই বিষয়ে নিজের দায় অস্বীকার করে বলেছেন যে, তিনি কেবল একজন সম্মানসূচক চেয়ারম্যান এবং কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রমে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে