ঢাকা, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

গেমিং অ্যাপে ভোট দিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৯:৩৩:০৬
গেমিং অ্যাপে ভোট দিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি নেপালে ঘটে গেছে এক ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান। তরুণ প্রজন্ম—বিশেষ করে জেনারেশন জেড (Gen-Z)—এর উদ্যোগে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি সরকারের পতন ঘটে। এ আন্দোলন শুধু রাজপথেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং প্রযুক্তিনির্ভর গণতন্ত্রের এক উদ্ভাবনী উদাহরণ তৈরি করেছে।

আলোচিত এই অভ্যুত্থানের পর নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে একটি গেমিং ও মেসেজিং অ্যাপ—ডিসকর্ডে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল ভোটের মাধ্যমে।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ‘হামি নেপাল’-এর মাধ্যমে এ ভার্চুয়াল ভোট অনুষ্ঠিত হয়।ডিসকর্ড প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এই আলোচনায় অংশ নেন দেশ-বিদেশে অবস্থানরত ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি সদস্য।

বিতর্ক, আলোচনার পর চূড়ান্তভাবে ১০ হাজারের বেশি তরুণ ও প্রবাসী নেপালি ভোটার পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে নির্বাচন করেন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীকে।

আলোচনার সময় সরকারের দুর্নীতি, বেকারত্ব, বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার, পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তি ও মতবিনিময় চলে।

এই পুরো প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ইউটিউবে, যা গোপন রাজনৈতিক দরকষাকষির বিরুদ্ধে এক স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক উদাহরণ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।

চূড়ান্ত তালিকায় যাদের রাখা হয়েছিল তারা হলেন:

হারকা সাম্পাং – ধারানের মেয়র ও সমাজকর্মী

মহাবীর পুন – জাতীয় উদ্ভাবন কেন্দ্রের প্রধান ও জনপ্রিয় সমাজকর্মী

সাগর ধাকাল – স্বতন্ত্র রাজনীতিবিদ

রাষ্ট্র বিমোচন টিমালসিনা (র‍্যান্ডম নেপালি) – অ্যাডভোকেট ও ইউটিউবার

সুশীলা কার্কি – সাবেক প্রধান বিচারপতি

শেষ পর্যন্ত দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থান ও বিচার বিভাগের পক্ষে স্পষ্ট ভূমিকার কারণে সুশীলা কার্কিকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেয় তরুণরা।

অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সুশীলা কার্কি ঘোষণা দিয়েছেন,“আমরা ছয় মাসের বেশি এখানে থাকবো না। দায়িত্ব শেষ করেই ক্ষমতা হস্তান্তর করবো।”

তিনি আগামী ৫ মার্চ জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন।

নেপালের তরুণরা বিশ্বাস করে,“এটি প্রচলিত গোপন রাজনৈতিক সমঝোতার বাইরে এক স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক পরীক্ষা।”

তাদের মতে, এটা শুধু একটি ভোট নয়, বরং “ডিজিটাল গণতন্ত্রের যুগে তরুণদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের এক অনন্য উদাহরণ”।

যদিও প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ডিসকর্ড নেপালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ছিল, তবুও তরুণরা এই মাধ্যমকে ব্যবহার করেছে সাংগঠনিক স্বচ্ছতা ও যোগাযোগের জন্য।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে