ঢাকা, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

বাংলাদেশের শীর্ষ ১০জন শিক্ষিত পলিটিক্যাল লিডার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৯:১৪:৪২
বাংলাদেশের শীর্ষ ১০জন শিক্ষিত পলিটিক্যাল লিডার

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষা একটি জাতির উন্নয়নের মূল ভিত্তি, আর শিক্ষিত নেতৃত্ব একটি দেশের সঠিক দিকনির্দেশনা নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে রাজনীতির ইতিহাসে অনেক নেতাই আছেন যারা কেবল রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নয়, বরং উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও জনকল্যাণে অবদান রেখে চলেছেন। এ ধরনের নেতারা রাষ্ট্র পরিচালনায় শুধু আবেগ নয়, যুক্তি, বিশ্লেষণ ও জ্ঞানকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তাদের শিক্ষা ও মেধা রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনায় যেমন গভীরতা আনে, তেমনি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনেও সহায়ক হয়।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় ও প্রভাবশালী এমন ১০ জন শিক্ষিত রাজনৈতিক নেতার শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যারা নিজেদের জ্ঞানের ভিত্তিতে রাজনীতিতে আলাদা অবস্থান গড়ে তুলেছেন এবং জাতিকে ভবিষ্যতের পথ দেখাতে সক্ষম হয়েছেন।

১. তারিক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারিক রহমানের শিক্ষাজীবন শুরু হয় ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে, যেখানে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে তিনি আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন। এর পর তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার শিক্ষাগত পটভূমি তার রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২. ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। তিনি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর, ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যের কলেজ অব ল থেকে বার ভোকেশনাল কোর্স সম্পন্ন করে ব্যারিস্টার উপাধি লাভ করেন। শিক্ষাজীবনে তার আইনভিত্তিক অভিজ্ঞতা তাকে একজন দক্ষ রাজনৈতিক বক্তা ও আইনি বিশ্লেষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

৩. সৈয়দ ফয়জুল করিম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রধান সৈয়দ ফয়জুল করিম একজন ইসলামী পণ্ডিত ও রাজনীতিক। তিনি ১৯৯৫ সালে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা থেকে কামিল পাশ করেন। এরপর বরিশালের সাগরদি ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ফিকহ ও হাদীস বিষয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ধর্মীয় শিক্ষার গভীর জ্ঞান তাকে ইসলামী রাজনৈতিক দর্শনের একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রচারক হিসেবে গড়ে তুলেছে।

৪. আন্দালিব রহমান পার্থ

জাতীয় পার্টির রাজনীতিবিদ এবং সাবেক মন্ত্রী আন্দালিব রহমান পার্থ ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে বার এট ল পাস করেন। দেশে ফিরে এসে তিনি দেশের খ্যাতনামা আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হকের অধীনে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় আইন পেশায় নিয়োজিত এবং ব্রিটিশ স্কুল অব ল-এর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার শিক্ষাগত প্রজ্ঞা ও আইনজ্ঞান তাকে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

৫. মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা মামুনুল হক তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায়। তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের অধীনে ১৯৯৫ সালে স্নাতক (আলিম) সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯৬ সালে দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। পাশাপাশি তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষার এই সংমিশ্রণ তার বক্তৃতা ও রাজনীতিতে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়।

৬. রুমিন ফারহানা

রুমিন ফারহানা একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও বিএনপির নেত্রী। তিনি হলিক্রস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক এবং লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। তার দৃঢ় উচ্চারণ, যুক্তিবদ্ধ বক্তব্য এবং আইনজ্ঞান তাকে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।

৭. ডা. শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান একজন চিকিৎসক ও রাজনীতিক। তিনি ১৯৭৪ সালে বড়মাচল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৬ সালে সিলেটের এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ১৯৮৩ সালে সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তার চিকিৎসাগত অভিজ্ঞতা ও সামাজিক সচেতনতা রাজনৈতিক কার্যক্রমে ভূমিকা রাখে।

৮. মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার শিক্ষাজীবনে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে তার অর্থনৈতিক জ্ঞান তাকে রাজনৈতিক বক্তৃতা ও নীতিনির্ধারণে দক্ষতা এনে দিয়েছে।

৯. ডা. আসিফ নজরুল

ডা. আসিফ নজরুল একজন বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক এবং ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে ১৯৯৯ সালে যুক্তরাজ্যের সোয়াস ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার লেখনী, গবেষণা ও বক্তৃতা রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখে চলেছে।

১০. ডা. মুহাম্মদ ইউনূস

নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডা. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন এবং সে বছর পূর্ব পাকিস্তানের ৩৯,০০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬তম স্থান অর্জন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে ১৯৬০ সালে স্নাতক এবং ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার গবেষণা ও উদ্ভাবনী চিন্তা তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয় এবং তিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষিত ও দূরদর্শী বাংলাদেশি নেতায় পরিণত হন।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে