ঢাকা, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি ছাড় দিতে প্রস্তুত: তারেক রহমান

২০২৫ জুলাই ০২ ২২:২৯:০৮
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি ছাড় দিতে প্রস্তুত: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক: একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তি রচনা এবং রাষ্ট্র সংস্কারের স্বার্থে বিএনপি কিছু বিষয়ে ছাড় দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ বুধবার (০২ জুলাই) পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, "তবে এর মানে এই নয় যে সব কিছুতে ছাড় দেওয়া হবে। বিএনপির কারণে সংস্কার এগুচ্ছে না এমন দাবি বিভ্রান্তিকর। মানুষের প্রত্যাশা অনুসারে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বিএনপি হচ্ছে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। বড় হওয়ার কিছু সমস্যাও রয়েছে। বড়দের অনেক কিছু ছাড় দিতে হয়, স্যাকরিফাইস করতে হয়। দেশের মানুষ যেন গণতন্ত্রের চর্চা করতে পারে তার জন্য আমরা ছাড় দিয়েছি।"

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, দেশের মানুষ এখন কৃষক, শিক্ষার্থী, নারী, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, এবং বেকারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জানতে চায়। তিনি বলেন, "শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ২১ দফা কর্মসূচি আমাদের সেই পথেই পরিচালিত করে।"

জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা স্মরণ করিয়ে তিনি গণতন্ত্রের শর্ত হিসেবে সহনশীলতা, অপরের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আড়াই বছর আগে বিএনপি রিফর্ম প্রস্তাব দিয়েছিল এবং জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে যখন তিন দিন কোনো সরকার ছিল না, তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা দায়িত্ব নিয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিচালনা করেছেন।নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, "এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে মানুষ আমাদের অপছন্দ করে। গণতন্ত্রের ভীত যাতে শক্ত হয় সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করতে হবে।"

তিনি বলেন, এই সম্মেলনে ১ হাজার ৫১১ জন কাউন্সিলরের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামো কতটা শক্তিশালী। তবে, এই কাউন্সিলরদের বাইরেও সারাদেশে বিএনপির ১২ কোটি ৫০ লাখ ভোটার প্রকৃত কাউন্সিলর, যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই বিএনপিকে সামনের পথ রচনা করতে হবে।

জাতীয় ঐক্য এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে সংগ্রাম করেছেন, গুম, হত্যা, মামলা, নির্যাতনের শিকার হয়েও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে তারা পিছু হটেননি। এই ত্যাগ ও লড়াইয়ের ফলে আজ বিএনপির কাঁধে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি।

ভবিষ্যতের রূপরেখা সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, "জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে। এখন সময় এসেছে দেশের প্রতিটি নেতাকর্মীকে জনগণের সঙ্গে মিশে যাওয়ার।" তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সম্মেলন বা কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনই নয়, বরং জনগণের ভালোবাসা, আস্থা ও প্রত্যাশাকে ধারণ করে বিএনপিকে আগামীর দায়িত্ব নিতে হবে। ফ্যাসিস্টরা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল বলে মানুষ তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেশের মানুষের সঙ্গে দেখা হবে।

এর আগে সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সম্মেলন স্থল ব্যায়ামাগার এলাকায় ভিড় করেন দলের নেতাকর্মীরা। সকাল দশটায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধন করেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

উদ্বোধন শেষে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়ার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টির সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও বিভিন্ন ইউনিট নেতারা।

মারুফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে