ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
Sharenews24

ট্রাম্পের সামনে তিন নাটকীয় সিদ্ধান্ত

২০২৫ জুন ১৭ ১৮:২২:৩৪
ট্রাম্পের সামনে তিন নাটকীয় সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান ইরান-ইসরাইল উত্তেজনার পটভূমিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো ইসরাইলের হামলায় সরাসরি সমর্থন জানাচ্ছেন, আবার কখনো কূটনৈতিক সমঝোতার কথা বলছেন। তার এই অদল-বদলের অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি বলেছেন, ইরানে চালানো হামলাগুলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয়ের মাধ্যমে’ হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে—ট্রাম্প আসলে কী ভাবছেন? তার সামনে এখন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পথ খোলা।

১. নেতানিয়াহুর চাপে নতি স্বীকার ও সংঘাত বাড়ানো

গত ১৩ জুন রাতে ইসরাইলের বিমান হামলার পর ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন—ইরান যদি চুক্তিতে না আসে, তবে আরও ভয়াবহ হামলা হবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবহৃত হবে।

তিনি বারবার বলেছেন, ইরান যেন কখনোই পারমাণবিক বোমার মালিক না হয়। যদিও তিনি আলোচনার মাধ্যমে একটি ‘বিশ্বমানের চুক্তি’ করাই বেশি পছন্দ করেন—এটা তার ‘চুক্তি-কারিগর’ ইমেজেরও অংশ।

কিন্তু বাস্তবতায় তিনি দ্বিধান্বিত—একদিকে হুমকি, অন্যদিকে কূটনীতি। এই দ্বিধাকে তার সমর্থকেরা ‘ম্যাড ম্যান থিওরি’ নামে ব্যাখ্যা করেন—যেখানে অনিশ্চয়তা তৈরি করে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা হয়।

তবে ইসরাইল তাকে সামরিক পথ বেছে নিতে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাংকার বোমা’ ব্যবহার করে ফরদোর মতো ইউরেনিয়াম কেন্দ্রে হামলা করলে দ্রুত ফল আসবে।

এদিকে কংগ্রেসের কিছু রক্ষণশীল রিপাবলিকানও ইরানে সরকার পরিবর্তনের দাবিতে ট্রাম্পের ওপর চাপ দিচ্ছেন। যদিও ওমানে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান ষষ্ঠ দফার আলোচনাও সম্প্রতি বাতিল হয়েছে, যা সংঘর্ষ বাড়ার ইঙ্গিত দেয়।

২. মধ্যপন্থা অবলম্বন করা

ট্রাম্প এখনও বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইসরাইলের হামলায় জড়িত নয়। যদিও বাস্তবে মার্কিন নৌবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ইসরাইলকে সহায়তা করছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা তাকে সতর্ক করছেন—এই মুহূর্তে এমন কিছু না করতে যা সংঘাতকে উসকে দিতে পারে। কারণ ইরানের কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইতোমধ্যেই ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করেছে।

নেতানিয়াহুর মতে, খামেনিকে টার্গেট করলেই যুদ্ধ থামবে, কিন্তু ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে সে ধরনের হামলার বিপক্ষে—এমনটাই জানাচ্ছেন হোয়াইট হাউস ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা।

৩. সম্পূর্ণভাবে পিছিয়ে আসা

ট্রাম্পের সামনে আরেকটি পথ হলো—সম্পূর্ণরূপে সংঘাত থেকে সরে আসা। যদিও রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের অনেকেই ইসরাইলের প্রতি জোরালো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন, তবে তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ আন্দোলনের ভেতরে এখন প্রশ্ন উঠছে—মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কেন জড়াবে?

বিশিষ্ট ট্রাম্পপন্থি সাংবাদিক টাকার কার্লসন কড়া ভাষায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘যুদ্ধে জড়িত নয়’—এই দাবি ভাঁওতা। ইসরাইল যেন নিজের যুদ্ধ নিজেই লড়ুক।

মার্কিন কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেলর গ্রিন বলছেন, “যারা আমেরিকাকে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে জড়াতে চায়, তারা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে।”

এই অভ্যন্তরীণ চাপ ট্রাম্পকে তার অবস্থান পুনর্বিবেচনায় বাধ্য করতে পারে। কিছু কিছু বক্তব্যে সেই ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে