ঢাকা, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
Sharenews24

সবগুলো দুর্বল ব্যাংক একসঙ্গে একীভূত করা হবে না: গভর্নর

২০২৫ মে ২৭ ১৮:২৯:১০
সবগুলো দুর্বল ব্যাংক একসঙ্গে একীভূত করা হবে না: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের সব দুর্বল ব্যাংক একসঙ্গে একীভূত করা হবে না। এটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে সরকার এসব ব্যাংক অধিগ্রহণ করবে এবং পরে বিদেশি বড় বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তিনি বলেন, “সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা। একীভূতকরণে বিনিয়োগকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে।”

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে কিছু রাজনৈতিক নেতার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হলেও, কোনও ব্যবসায়িক বা প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব জব্দ করা হয়নি বলে জানান গভর্নর। তিনি বলেন, “আমরা কোনো বিজনেস অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করিনি। প্রতিষ্ঠান দোষী হলেও তাদের কার্যক্রমে বাধা দেওয়া হয়নি—শুধু নিশ্চিত করছি যেন অর্থপাচার না হয়।”

অর্থ পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ বা সম্পদ ফেরত আনতে কত সময় লাগবে—এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, “৩ থেকে ৫ বছর লাগতে পারে। তবে এটা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আমরা এরইমধ্যে বিদেশ থেকে কিছু সম্পদের অবস্থান শনাক্ত করেছি এবং জব্দের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বছরের অন্যতম অগ্রাধিকার হচ্ছে পাচার হওয়া সর্বোচ্চ সম্পদ উদ্ধার। তবে তিনি স্বীকার করেন, আন্তর্জাতিক ও দেশের আইনি কাঠামোর মধ্যে পার্থক্য থাকায় এ প্রক্রিয়া অনেক সময় জটিল হয়ে পড়ে।

“আমাদের আগে থেকেই নির্ধারণ করতে হবে—কার বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা করা হবে আর কার বিরুদ্ধে ফৌজদারি। যদি মামলাগুলোর মধ্যে সাংঘর্ষিকতা তৈরি হয়, তাহলে সেই মামলার অগ্রগতি থেমে যাবে।”

গভর্নর বলেন, “বাংলাদেশে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় না থাকায় অনেক সময় পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়। এ সমস্যা কাটাতে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। নতুন আইনি সংশোধনের মাধ্যমে এই টাস্কফোর্সকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যাতে তা আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।”

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম।

২০২৩–২৪ অর্থবছরে ১৭,৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন বা কার্যক্রমের প্রতিবেদন জমা পড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২২.৩৬% বেশি।

বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে ১,২২০ বার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩.৯১% বেশি।

চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত আরও ১৮,০২৫টি সন্দেহজনক লেনদেন ও ৯,১০৫টি কার্যক্রমের প্রতিবেদন জমা পড়েছে।

বিএফআইইউর পরিচালক মুহাম্মদ আনিছুর রহমান বলেন, “গত বছরের জুলাইয়ের পর থেকে বিএফআইইউর কার্যক্রম কয়েক গুণ বেড়েছে। অর্থ পাচার শনাক্ত ও প্রতিরোধ একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে