ঢাকা, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
Sharenews24

ছয় মাসের মধ্যে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি

২০২৫ মে ২৬ ০৬:২২:৪১
ছয় মাসের মধ্যে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গত ১৮ মে বিএসইসি এক চিঠির মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে এ বিষয়ে অবহিত করেছে। চিঠিতে ১১ মে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া পাঁচটি নির্দেশনা বাস্তবায়নের সময়সূচি তুলে ধরা হয়েছে।

এই পাঁচ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে বিদেশি ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার শেয়ারবাজারে ছাড়া, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের ব্যবধান বৃদ্ধি, বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় তিন মাসের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু, শেয়ারবাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বড় কোম্পানিগুলোকে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে উৎসাহিত করা।

এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর দায়িত্ব নির্ধারণ করে দিয়েছে বিএসইসি। যেমন, শিল্প মন্ত্রণালয় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিদেশি ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বাজারে ছাড়ার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-কে আগামী বাজেটে শেয়ারবাজারবান্ধব প্রণোদনা দিতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংককে ছয় মাসের মধ্যে কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের পথ সহজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সেমিনারে বিএসইসি কমিশনার মোহসিন চৌধুরী বলেন, প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ দফা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কমিশন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তিনি জানান, বিএসইসি অর্থ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছে এবং তাদের নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে কিছু প্রশ্নও উঠেছে। একই সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এই পাঁচ নির্দেশনার মধ্যে তিন বা চারটি কেবল সরকারের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা, তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুবিধা, আইনি অস্পষ্টতা নিরসন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তি—এই দিকগুলোতে সরকারের অগ্রগতির ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, কোনো সংস্কার টেকসই করতে হলে তা হতে হবে “নির্দিষ্ট, বাস্তবায়নযোগ্য এবং স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত,” যাতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মালিকানা বোধ গড়ে ওঠে। তিনি শুধুমাত্র বিদেশি প্রযুক্তিগত সহায়তার ওপর নির্ভর করাকে টেকসই পথ হিসেবে দেখেন না।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিলে বিএসইসির ২১ জন কর্মকর্তাকে চাকরি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ নিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী এক কর্মবিরতিতে অংশ নিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবিও জানায় প্রতিষ্ঠানটির একটি অংশ। যদিও চেয়ারম্যানের গঠিত তদন্ত কমিটি একাধিক অনিয়মের প্রতিবেদন দিলেও, সেগুলোর ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত বড় কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি—এমন অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে