ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
Sharenews24

অন্তর্বর্তী সরকারেও স্বচ্ছতার ঘাটতি, অভিযোগ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের

২০২৫ মে ২৮ ০৬:১৩:১৬
অন্তর্বর্তী সরকারেও স্বচ্ছতার ঘাটতি, অভিযোগ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, সরকার পরিবর্তন হলেও বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় কোনো পরিবর্তন আসেনি, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, বৈষম্য হ্রাস বা কর্মসংস্থান বাড়াতে বর্তমান সরকারের কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের কাজেও স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এই অর্থনীতিবিদ।

মঙ্গলবার (২৭ মে, ২০২৫) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এনটিভির স্টুডিওতে অনুষ্ঠিত ‘কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এফবিসিসিআই ও এনটিভির যৌথ আয়োজনে এই আলোচনা অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান এবং বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম উপস্থিত ছিলেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সরকার বদলেছে ঠিকই, কিন্তু প্রক্রিয়া আগের মতোই রয়ে গেছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাজেট এখনো পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল, এবং বৈষম্য কমাতে বা কর্মসংস্থান বাড়াতে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। তার মতে, বাজেট নিয়ে আবার সেই পুরনো কথাই শোনা যাচ্ছে। তিনি বিশ্বব্যাংকের তথ্য উদ্ধৃত করে বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের মেয়াদে ২৭ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমেছে, যার মধ্যে ১৮ লাখই নারী। এই প্রেক্ষাপটে তিনি প্রশ্ন তোলেন, "নতুন সরকার কীভাবে বৈষম্য হ্রাসে কাজ করছে?"

তিনি আরও বলেন, এই বাজেট আসলে পূর্ববর্তী সরকারের বাজেটেরই ধারাবাহিকতা, এবং এতে কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন হয়নি। বড় প্রকল্পে বরাদ্দ কমানো হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই, বরং মেগা প্রকল্পগুলোতেই বরাদ্দ বাড়তে দেখা যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাজেট প্রণয়নে অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ঘাটতির বিষয়টিও তুলে ধরেন। তার মতে, এনবিআর ভাগ করা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও, তা নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় কার্যকর বাস্তবায়ন হয়নি। শেয়ারবাজার পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রেও একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এই সরকার বৈধ হলেও নির্বাচিত নয়। ফলে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু সংস্কার, নির্বাচন, বিচার– এসব নিয়ে যখন আলোচনার জোয়ার, তখন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ পথরেখা নিয়েও পরিষ্কার পরিকল্পনা থাকা জরুরি।

অন্যদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশের অর্থনীতি অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আইএমএফের সহায়তায় আমরা আইসিইউ থেকে বেরিয়ে এসেছি, যা একটি বড় অর্জন।

বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান বলেন, এ বাজেট আসলে অন্তর্বর্তীকালীন, সত্যিকারের জনগণের বাজেট নয়। গত ৯ মাসে কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেয়নি সরকার, অথচ প্রায় ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে – তবে বাজেট নিয়ে কেন নয়?

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানান, এবার রাজস্ব আদায়ে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার কথাও বলেন।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আগে আমাদের প্রস্তাবনা বাজেটে প্রতিফলিত হতো না। তবে এবার তারা কিছুটা আশাবাদী। যদিও তার মতে, শিল্প খাত এখনো অনেকটা আইসিইউতে রয়েছে, এবং তাকে সচল করতে কিছু প্রণোদনা দরকার।

মারুফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে