ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
Sharenews24

সচিবালয়ে বিক্ষোভের কারণ জানালেন কর্মকর্তারা

২০২৫ মে ২৫ ১৬:২৯:৫৫
সচিবালয়ে বিক্ষোভের কারণ জানালেন কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ সংশোধন করে শাস্তির বিধান আরও কঠোর করার উদ্যোগের বিরুদ্ধে রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা সংশোধিত ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-কে “নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন” হিসেবে আখ্যা দিয়ে এই উদ্যোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

সকালে সাড়ে ৯টা থেকেই সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে কর্মচারীরা জড়ো হতে থাকেন। যদিও সকাল ১০টায় ‘মৌন মিছিল’ ঘোষিত থাকলেও, কর্মসূচি চলাকালে তারা বিভিন্ন স্লোগানে প্রতিবাদ জানান। তাদের কণ্ঠে শোনা গেছে— “এক হও লড়াই কর”; “অবৈধ কালো আইন, মানি না মানব না”; “আমাদের দাবি মানতে হবে”।

সচিবালয়ের বিভিন্ন ভবনের সামন দিয়ে স্লোগান দিতে দিতে তারা মিছিল করে ঘুরে বেড়ান। দুপুর দেড়টার দিকে তারা কর্মসূচি স্থগিত করলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কর্মচারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দাবি না মানলে সচিবালয় অচল করে দেওয়ার মতো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন।

আন্দোলনকারীদের দাবি, সংশোধিত খসড়ায় সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না রেখেই চাকরিচ্যুতির মতো কঠোর পদক্ষেপের বিধান রাখা হয়েছে, যা অযৌক্তিক ও সংবিধানবিরোধী।

অধ্যাদেশের খসড়ায় যেসব নতুন শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:

শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা দায়িত্ব পালনে অবহেলায় সরাসরি চাকরিচ্যুতি

ছুটি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিতি

কাজে যোগ না দিতে উসকানি দেওয়া

আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যবস্থা

খসড়া পর্যালোচনায় যারা আছেন

২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অধ্যাদেশ আইনের ভেটিংয়ের জন্য পাস হয়। তবে তা পর্যালোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চারজন উপদেষ্টাকে:

আসিফ নজরুল (আইন উপদেষ্টা)

ফাওজুল কবির খান (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা)

রিজওয়ানা হাসান (পরিবেশ উপদেষ্টা)

আদিলুর রহমান খান (গণপূর্ত উপদেষ্টা)

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে কর্মচারীদের শাস্তি দিতে সাত-আটটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। ফলে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সেই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এই সংশোধনের প্রয়োজন ছিল।

তবে তিনি বলেন, বর্তমান খসড়ায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হলো— ২৫ বছর চাকরি করার পর বাধ্যতামূলক অবসরের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ কর্মচারীরা সেই বিষয়ে মুখ খোলেননি।

সরকার একদিকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কথা বলছে, অন্যদিকে কর্মচারীরা বলছেন, এতে কণ্ঠরোধ, নিপীড়ন ও স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ তৈরি হবে। এখন দেখার বিষয়— সরকারের পক্ষ থেকে এই অধ্যাদেশের ভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো সমন্বয় আনা হয় কি না।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে