ঢাকা, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

এশিয়াটিক গ্রুপের ৮ পরিচালকসহ ১৭ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ

২০২৫ এপ্রিল ২৩ ২১:২১:৫৭
এশিয়াটিক গ্রুপের ৮ পরিচালকসহ ১৭ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) অধীনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (CIC) সম্প্রতি বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক গ্রুপ এবং তাদের পরিচালকদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, কর ফাঁকি ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। সংস্থাটি ৮ জন পরিচালকসহ ১৭টি প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয়। ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।

যাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে, তারা সবাই এশিয়াটিক গ্রুপের পরিচালক। তালিকায় রয়েছেন:

আসাদুজ্জামান নূর — আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী

সারা যাকের — প্রয়াত আলী যাকেরের স্ত্রী

ইরেশ যাকের ও শ্রেয়া সর্বজয়া — আলী যাকেরের সন্তান

ইকরাম মাঈন চৌধুরী, মো. মোরশেদ আলম, মোহাম্মদ হাসান ফারুক ও মো. রেজাউল হাসান

এশিয়াটিক গ্রুপ দাবি করেছে, ২০২৪ সালের আগস্টে আসাদুজ্জামান নূর তাদের কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যান। তবে পদত্যাগের নির্দিষ্ট তারিখ বা প্রমাণ তারা দেয়নি।

সিআইসির চিঠিতে উল্লেখিত ১৭টি প্রতিষ্ঠান হলো:

এশিয়াটিক মিডিয়া লিমিটেড

এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশন লিমিটেড

এশিয়াটিক টকিং পয়েন্ট কমিউনিকেশনস লিমিটেড

এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মার্কেটিং

অপটিমাম সার্ভিস লিমিটেড

এশিয়াটিক ইভেন্টস মার্কেটিং

মিডিয়া কমিউনিকেশন্স লিমিটেড

ফোরথট পিআর লিমিটেড

এশিয়াটিক মাইন্ড শেয়ার

এশিয়াটিক টিএমএস

ব্ল্যাকবোর্ড স্ট্র্যাটেজিজ

আউট অব দ্য ব্লু-ডিজাইন স্টুডিও (পূর্বতন কুকি জার)

ধ্বনি চিত্র (পূর্বতন ধ্বনি রেকর্ডিং স্টুডিও)

স্টেনসিল বাংলাদেশ

রেডিও স্বাধীন

ইস্ট এশিয়াটিক অ্যাডভারটাইজিং

এশিয়াটিক ইভেন্টস মার্কেটিং (পুনরায় তালিকাভুক্ত)

একজন ব্যক্তি নিজ নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ একটি লিখিত অভিযোগ সিআইসিতে জমা দেন। সেখানে বলা হয়, এসব প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিগত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে কর ফাঁকি ও আর্থিক অনিয়ম করেছেন। এছাড়া গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনকেও উল্লেখ করা হয়, যার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়।

সিআইসির মতে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সম্পদের তথ্য গোপন করে আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন। যদি এসব হিসাব থেকে টাকা তুলে ফেলা হয়, তবে রাজস্ব আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এজন্য আয়কর আইন ২০২৩-এর ২২৩(২) ধারা অনুযায়ী, অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তর স্থগিত রাখা হয়েছে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০০৯-২০১৪ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতীয় সেনা ও তাদের পরিবারের নামে বরাদ্দকৃত স্বর্ণ ও অর্থ আত্মসাৎ হয়।

মুজিব শতবর্ষ, ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফর, জয়বাংলা কনসার্ট—এসব অনুষ্ঠানে প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

‘মুজিব’ সিনেমার প্রচার-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ইভেন্টেও অবৈধভাবে অর্থ ব্যবহার হয়।

এখন পর্যন্ত সিআইসি এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ ও তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বা অর্থদণ্ডসহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে