ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

অবশেষে আলোর মুখ দেখছে টার্মিনাল

২০২৫ এপ্রিল ২১ ০৯:২৭:৫১
অবশেষে আলোর মুখ দেখছে টার্মিনাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ এক দশক ধরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে থাকা ১৪ হাজার কোটি টাকার বিশাল প্রকল্প চট্টগ্রাম বে টার্মিনাল অবশেষে আলোর মুখ দেখতে চলেছে। গত ২০ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) থেকে প্রকল্পটির অনুমোদন পাওয়ার মাত্র দুই দিনের মাথায়, ২৩ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

পতেঙ্গা উপকূলে বিকল্প বন্দর সুবিধা গড়ে তোলার পরিকল্পনা শুরু হয় এক দশকেরও আগে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, অর্থায়ন এবং পরিকল্পনা ঘাটতির কারণে বারবার থেমে যায় প্রকল্পটি। অবশেষে এই মেগা প্রকল্পের অর্থায়ন, কারিগরি সহায়তা ও বাস্তবায়নের পথে দৃশ্যমান অগ্রগতি হলো।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, “বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তির পরই প্রকল্পের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে। ঠিকাদার নিয়োগসহ অন্যান্য ধাপ দ্রুতই সম্পন্ন করা হবে।”

বন্দরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী,

মোট প্রকল্প ব্যয়: ১৩,৫২৫ কোটি টাকা

বিশ্বব্যাংকের সহায়তা: ৯,৩৩৩ কোটি টাকা

বন্দরের নিজস্ব অর্থায়ন: ৪,১৯২ কোটি টাকা

খরচের খাতগুলো:

৮,২৬৯ কোটি টাকা: ব্রেক ওয়াটার নির্মাণে

১,৯৭৯ কোটি টাকা: নেভিগেশন এক্সেস চ্যানেল

৫৭ কোটি টাকা: নেভিগেশন যন্ত্রপাতি

৩,৪৩৪ কোটি টাকা: রেল ও সড়ক সংযোগে

বিশ্বব্যাংকের চুক্তির পরপরই, সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি (PSA) এবং আরব আমিরাতভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড (DP World)—এই দুই প্রতিষ্ঠান মিলে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। তারা দু’টি টার্মিনাল নির্মাণ করবে, যার দৈর্ঘ্য হবে ১,২২৫ মিটার। অপর একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, যার দৈর্ঘ্য ১,২৫০ মিটার।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর জোয়ারের ওপর নির্ভর করে জাহাজ চলাচল পরিচালনা করে। তবে সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত বে টার্মিনাল ২৪ ঘণ্টা জাহাজ চলাচলের সুবিধা দেবে।

ড্রাফট: ১২ মিটার

জাহাজের দৈর্ঘ্য: সর্বোচ্চ ২০০ মিটার

বর্তমান কনটেইনার হ্যান্ডলিং: ৩২ লাখ

বে টার্মিনালের সক্ষমতা: ৫০ লাখ কনটেইনার/বছর

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, “বে টার্মিনালে মাদার ভ্যাসেল মুভমেন্ট অনেক বেশি হবে, যা দেশের বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ করবে।”

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, “আগামী ৫০ থেকে ১০০ বছরের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই টার্মিনাল ডিজাইন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।”

শুরুর পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৬ সালে টার্মিনাল চালু হওয়ার কথা থাকলেও নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ২০২৯ সালে অপারেশনাল হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বে টার্মিনাল শুধু একটি অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়—এটি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক বন্দর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার একটি নতুন দিগন্ত।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে