ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
Sharenews24

ভারতীয় গোয়েন্দাদের বাংলাদেশে টেলিফোন কল মনিটরিং পরিকল্পনা

২০২৫ মার্চ ১৭ ১১:০৫:৫৮
ভারতীয় গোয়েন্দাদের বাংলাদেশে টেলিফোন কল মনিটরিং পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং শেখ হাসিনার শাসনামলে ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স) সংস্থার ভূমিকা ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। বিশেষ করে, ডিজিএফআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা বলপূর্বক গুম এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল। এই অভিযোগগুলির পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, যা বিশেষ করে ছাত্র নেতৃত্বাধীন আন্দোলনগুলোর মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

শেখ হাসিনার শাসনামলে তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেক আহমেদ সিদ্দিকী মাধ্যমে ডিজিএফআইকে দমন-পীড়নের একটি হাতিয়ারে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। তবে কিছু ক্ষেত্রে ডিজিএফআই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নতি স্বীকার করতে অস্বীকার করেছে। ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের আগে এবং পরে, ডিজিএফআই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, যা বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল।

এসএস সেভেন (SS7), যা ১৯৭০ এর দশকে তৈরি করা একটি টেলিফোন সিগন্যালিং প্রোটোকল, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র&AW’ বা আইএসআই এর কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ছিল। এই লিংকের মাধ্যমে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বাংলাদেশের ভয়েস কলের তথ্য সংগ্রহ করতে পারতো, যার মধ্যে ফোন নম্বর, কলের সময়কাল, অবস্থান এবং অন্যান্য মেটাডেটা অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ডিজিএফআই এর কর্মকর্তারা এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কারণ এটি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারতো।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের এসএস সেভেন লিংক স্থাপন করার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে, মেজর জেনারেল তারেক সিদ্দিকী এবং এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইনটেলিজেন্স) প্রধান মেজর জেনারেল টিএম জোবায়ির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তবে, ডিজিএফআই কর্মকর্তারা তাদের দেশের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো পদক্ষেপ নিতে অস্বীকার করেছিল, এবং দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে দৃঢ় প্রতিরোধ করেছিলেন।

ডিজিএফআই এর বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যারা ভারতীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। পদোন্নতি আটকে দেয়া এবং কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বদলি করা ছিল এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এ ধরনের পদক্ষেপগুলো ডিজিএফআই এর অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে এবং এটি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধিতা সৃষ্টি করেছে।

এই ঘটনাগুলি বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে গোপনীয়তা এবং নৈতিকতার প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বিশেষত, আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং দেশের নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে যে কঠিন অবস্থান নেয়া হয়েছিল, তা সরকারের প্রতি জনগণের আস্থার প্রশ্নেও প্রভাব ফেলেছে।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর